বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: আজ বুধবার চট্টগ্রামে গণসমাবেশের মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে বিএনপির কর্মসূচি। জ্বালানি তেল তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিএনপির ৫ নেতা হত্যার প্রতিবাদে ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে বেলা ২টায় শুরু হবে এ সমাবেশ। বিশাল পলোগ্রাউন্ডের পশ্চিমপ্রান্তে সুউচ্চ মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পলোগ্রাউন্ডের আশপাশের খোলা জায়গা এবং সবকয়টি সড়কে সমাবেশে আগত লোকজনের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আয়োজকরা বলছেন, সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে। সেটি মাথায় রেখেই চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। মাইকও লাগানো হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী। সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
এক দশক পর আন্দোলন-সংগ্রামের নগরী চট্টগ্রামে বিএনপির বড় ধরনের শোডাউনের ব্যাপক আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপি নেতারা জানান, বিভাগীয় গণসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। এ কর্মসূচি হবে দেশে চলমান গণআন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট। লাখো জনতার গণসমাবেশ থেকে সরকারকে চরম বার্তা দেয়ার আভাস দিয়েছেন দলের নেতারা। প্রশাসনের তরফে, গণসমাবেশ অনুষ্ঠানে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
তবে শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, য় সমাবেশের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির যেকোন প্রচেষ্টার দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।। এ লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক থাকারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। জনতার উত্তাল ঢেউয়ের কাছে সব বাধা, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যাবে।
গণসমাবেশ সফল করতে চট্টগ্রাম, তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরে গত পক্ষকাল ধরে ব্যাপক সভা-সমাবেশ ও প্রচার চালিয়েছে বিএনপি এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
গণসমাবেশ হবে আন্দোলনের মাইলফলক: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশ হবে বাংলাদেশে আন্দোলনের মাইলফলক। এ মহাসমাবেশ ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বিপুল জনসমাগমের মাধ্যমে সমাবেশ সফল হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি গতকাল মঙ্গলবার নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কোন ধরনের ফাঁদে পা দেব না। অনেকে চেষ্টা করবে এদিক-সেদিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য। আমরা আমাদের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাব। জনগণের জোয়ার যেখানে নামে সেখানে কোন শক্তি বাধা দিতে পারে না।
আমীর খসরু বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। যার যার এলাকায় সবাই মাঠে আছে, এটাকে সফল করার জন্য। জনগণের মধ্যে যে উৎসাহ উদ্দীপনা, আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি, মানুষের মধ্যে যে আশা জেগেছে, যে ক্ষোভ জেগেছে, সেটাকে পূরণ করার জন্য, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠ পলোগ্রাউন্ড আমরা বেছে নিয়েছি। এর আগে আমরা পলোগ্রাউন্ডে সভা করেছি বেগম খালেদা জিয়া এসেছিলেন, সেটা বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় জনসভা হয়েছিল। ২০-২৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল। এবার আমাদের নেত্রী আসবেন না, কিন্তু মানুষ সংগ্রামে নেমেছে, সেটার প্রতিফলন সমাবেশে দেখতে পাবেন। সারাদেশের মানুষ চট্টগ্রামের দিকে তাকিয়ে আছে।
চট্টগ্রামের পর আগামী ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে, ২২ অক্টোবর খুলনায়, ২৯ অক্টোবর রংপুরে, ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।