সিত্রাং এখন স্থল নিম্নচাপ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখন স্থল নিম্নচাপ। উপকূলে আঘাত হানার পর দুর্বল হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের অনেক জেলায় ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দমকা বাতাসে সোমবার সারাদেশে ১০জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
সমুদ্র বন্দরগুলোকে বিপৎসংকেত কমিয়ে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কুমিল্লায় একই পরিবারের তিনজন, ভোলায় দুজন, সিরাজগঞ্জে দুজন, নড়াইল, বরগুনা ও ঢাকায় একজন করে মোট ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে উপকূলের জেলায় আঘাত হানতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়। প্রবল বাতাসের সঙ্গে ছিল ভারি বৃষ্টি। এতে পানিতে তলিয়ে যায় অনেক এলাকা। ঝড়ের প্রভাবে রাজধানীতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎহীন, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হয়েছে উপকূলীয় কয়েকটি জেলা। ঝড়ের কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
রাজধানীতে ১২৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকার সড়ক। প্রবল বৃষ্টিতে বরিশাল নগরের অনেক এলাকা ডুবে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় উপকূলের কোনো কোনো স্থানে ৯ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এতে অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। জোয়ারের সময় ঝড় হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকোর নির্বাহী পরিচালক (প্রকৌশল) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলার বিদ্যুৎ শতভাগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড়ের কারণে বিতরণ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিছু কিছু এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কায় কিছু সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না।
সোমবার মধ্যরাতের পর আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অতি দ্রুত অগ্রসর হয়ে সোমবার মধ্যরাতে ভোলার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টি বৃষ্টি ঝরিয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমানে স্থল নিম্নচাপ আকারে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
এতে আরও বলা হয়, মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।