বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
সিলেট: শীতকালীন পরিচর্যায় চা গাছের সুস্থতা ও অধিক ফলনের জন্য শুরু হয়েছে প্রুনিং। বাগানে বাগানে চলছে প্রুনিং। আগামী মওসুমে অধিক চা পাতা উৎপাদনের জন্য এই প্রুনিং করা হয়।
এই গাছ কাটিং করা হয় দা দিয়ে। প্রতিবেশি ভারতে প্রায় ৭০ ভাগ প্রুনিং করা হয় আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারে। তাতে সেখানে চা শিল্পের ছবিটাই পালটে গেছে।
বাগান সংশ্লিষ্টরা জানালেন, অন্যান্য কৃষিপণ্যের মত আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে প্রুনিং হলে তাতে শ্রম, অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি কাটিং করার সময় আঘাত লেগে দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমে যাবে। চিরাচরিত প্রথায় বিঘা প্রতি বা গাছের সংখ্যা দেখে চুক্তির ভিত্তিতে প্রুনিং করেন শ্রমিকরা। দা দিয়ে যে কাজ করতে ৬/৭ ঘণ্টা লাগে তা যন্ত্রের ব্যবহারে লাগছে মাত্র ২ ঘণ্টা।
প্রুনিং মেশিনে আগা ছাঁটাই
তবে, বাগান সংশ্লিষ্টরা জানান যে আমাদের বাগানগুলো উঁচুনিচু টিলায়। তাই প্রুনিংয়ে পুরোপুরি আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে কিছুটা সমস্যাও রয়েছে। আর তা হল প্রুনিং মেশিন নিয়ে যাওয়ায়। অবশ্য হালকা প্রুনিং মেশিনও তৈরি হয়েছে।
অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন যে মেশিন দিয়ে প্রুনিং করতে গাছে বেশি চোট লাগবে। আর দা দিয়ে ছাঁটলে গাছের ক্ষতি কম হয়। এই ধারণাকে ভুল বলেছেন চা বিজ্ঞানী প্রদীপ দত্ত। তিনি জানালেন, বেশ কয়টি পদ্ধতিতে প্রুনিং হয়। অনেকেই দা বা প্রুনিং মেশিন ব্যবহার করে। এর কোনওটাই গাছের ক্ষতিসাধন করে না, বরং চা গাছের উপকার হয়।
চা গাছের স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ক্ষমতার দিক বিচেনায় এনে কয়েকটি পদ্ধতিতে প্রুনিং হয়। যেমন- চা গাছের বয়স হিসাবে করে একেকটি চা গাছের মাথা বেশি পরিমাণে ছাঁটাই, মাঝারি পরিমাণে ছাঁটাই এবং কম পরিমাণে ছাঁটাই। এগুলো কোনোটাই গাছের ক্ষতিসাধনের জন্য নয়, বরং চা গাছের অধিকতর উপকারিতার জন্য।
প্রুনিং রয়েছে নানা ধরনের। যেমন- কলার প্রুনিং (গলাকাটা ছাঁটাই), মিডিয়াম প্রুনিং (মধ্যম ছাঁটাই), লাইট প্রুনিং (হালকা ছাঁটাই), লো প্রুনিং (নিচু ছাঁটাই), ক্লিন প্রুনিং (পরিষ্কার ছাঁটাই)। গাছের বয়স, মাটির উর্বরতা প্রভৃতি দিক বিবেচনা করে প্রতিটি সেকশনের জন্য আলাদা আলাদা প্রুনিং নির্বাচন করা হয়।