বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি আগের কথা, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে পুরো দমে। বান্ধবীর বিয়ে হয়ে গিয়েছিল, তাঁকেই চিঠি লিখেছিলেন অন্য এক বান্ধবী। কিন্তু ভাগ্যের ফের, নাকি ডাক বিভাগের ভুল কে জানে, যাঁর উদ্দেশে পাঠানো হয়েছিল, শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও তাঁর হাতে এসে পৌঁছায়নি সেই চিঠি। আজ এত বছর পর আশ্চর্যভাবে সেই চিঠি এসে পৌঁছেছে পেশায় নাটক পরিচালক ফিনলে গ্লেনের কাছে !
অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিটেনে। চিঠিটি বেশ কিছুদিন আগেই এসে পৌঁছেছে গ্লেন ও তাঁর বান্ধবীর ঠিকানায়। সেটি পাওয়ার পর গ্লেন দেখেন, খামের উপর তারিখের জায়গায় লেখা রয়েছে ‘১৬। ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এটা ২০১৬ সালে পাঠানো হয়েছে। তারপর দেখলাম, রানির বদলে রাজা পঞ্চম জর্জের ছবি দেওয়া স্ট্যাম্প মারা রয়েছে। তখন আমরা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যাই, এটি কোনওভাবেই ২০১৬ সালের হতে পারে না।’ এরপরেই ভাল করে খতিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় একটি ইতিহাস বিষয়ক পত্রিকা নরউড রিভিউ-এর সম্পাদক স্টিফেন অক্সফোর্ডের কাছে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন গ্লেন।
স্টিফেন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, ২০১৬ নয়, বরং ১৯১৬ সালে পাঠানো হয়েছিল চিঠিটি (Letter Reaches destination after 100 years)। ব্রিটেনের বাথে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ক্রিস্টাবেল মেনেল নামে এক তরুণী। সেখান থেকেই বিবাহিত বান্ধবী কেটি মার্সের উদ্দেশে তাঁর স্বামী অসওয়াল্ড মার্সের ঠিকানায় পত্রটি লিখেছিলেন তিনি। তাতে লেখা রয়েছে, ‘প্রিয় কেটি, তুমি কি আমাকে তোমার থেকে কিছু জিনিস ধার দেবে? আমি যা করেছি তা বলার পর খুবই লজ্জিত বোধ করছি। প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে আমি এখানে ভীষণ কষ্টে রয়েছি।’
চিঠিটি কেন পৌঁছায়নি কেটির কাছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে স্টিফেন অক্সফোর্ডের দাবি, সিডেনহ্যাম সর্টিং অফিসে খুব সম্ভবত কোনওভাবে হারিয়ে গিয়েছিল চিঠিটি। ওই অফিসটিও তখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি সেটি খুলেছে। ‘হয়তো পুরনো আসবাবপত্রের পিছনে বা অন্য কোথাও পড়ে গিয়েছিল চিঠিটি, সেটি এখন খুঁজে পেয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন কর্মীরা,’ দাবি তাঁর।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ১৮ শতকের শেষ এবং ১৯ শতকের শুরুর সময় বাথ খুবই জনপ্রিয় পর্যটস্থল ছিল মধ্যবিত্তদের কাছে। চিঠিটির প্রেরক ক্রিস্টাবেল মেনেল ছিলেন স্থানীয় একজন চা ব্যবসায়ী হেনরি টিউক মেনেলের কন্যা। তিনি সেই সময় বাথে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই বান্ধবীকে চিঠি লিখেছিলেন ক্রিস্টাবেল।
গ্লেন জানিয়েছেন, চিঠিটির যদি কোনও ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকে, তাহলে তাঁরা সেটি স্থানীয় সরকারের কাছে দিয়ে দিতে চান। তবে আলাদা করে তেমন কোনও গুরুত্ব না থাকলে সেটি নিজেদের কাছেই রেখে দিতে চান যুগল।