Home Second Lead সংকটে ফুলবাড়ীর পাট চাষিরা

সংকটে ফুলবাড়ীর পাট চাষিরা

প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ি ( দিনাজপুর ) থেকে: ফুলবাড়ী উপজেলায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন পাট চাষিরা। একদিকে বৃষ্টি না হওয়া এবং অপরদিকে নিজস্ব পুকুর না থাকায় পাট জাগ দিতে বাড়তি খরচের সম্মুখীন তারা। নিতে হচ্ছে পুকুর ভাড়া।

এবারে ৪০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তোষা ও দেশি জাতের পাট। দৌলতপুর ইউনিয়নের হরহরিয়ারপাড় গ্রামের পাট চাষি মতিউর রহমান বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে পাট চাষ করি। কিন্তু এবছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ফসল খরায় নষ্ট হয়েছে। আবাদ কম হয়েছে। যা অবশিষ্ট রয়েছে তা একটি পুকুরে ভাড়া দিয়ে জাগ দিয়েছি। ২০ শতক জমির পাট জাঁক দিতে বাড়তি ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।

পাট কাটতে ৪ জন শ্রমিককে ২ হাজার টাকা এবং জাগ তৈরি করতে ২ জন শ্রমিককে ৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে। ভাড়া পুকুরটিতে ১৩ থেকে ১৫ দিন জাগ দিয়ে রাখতে হবে। ২০ শতক জমিতে মোট ৫ মণ পাট পাবো বলে আশা করছি।

চাষিরা জানান, খরার কারণে খাল-বিলে পানি না থাকায় এবছর অনেকে বাধ্য হয়ে মাছ চাষের পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। আবার অনেক চাষি বৃষ্টির আশায় পাট কেটে ক্ষেতেই রেখেছেন। অনেকে পাট কাটছেন না। কেউ কেউ নদীতে জাগ দিলেও পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট ভেসে যাচ্ছে।

মধ্যমপাড়া গ্রামের কয়েকজন পাটচাষি বলেন, আমরা নদী পাড়ের বাসিন্দা। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর প্রায় সবধরণের সফল নষ্ট হচ্ছে। ফলন কম হচ্ছে। আমাদের আবাদকৃত পাট নদীতে জাগ দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু কয়েকদিনে বৃষ্টিতে নদীর ¯্রতে বেড়েছে। জাগ দিলে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা আছে। পাট জাগ দিতে তাই হরহরিয়ার পাড়ে ডোবা ও পুকুর ভাড়া নিয়েছি।

খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের পাট চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, পাটচাষে বীজ, সার-কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক খরচ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে পাট জাগের খরচ অতিরিক্ত লাগছে। বর্তমান বাজারমূল্য প্রতিমন ২ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ পাট চাষে এ বছর কোনোমতে উৎপাদন খরচ উঠলেও লাভবান হবেন না তারা।

পুকুর মালিকরা জানান, কৃষকদের অনুরোধে তিনি পাট জাগ দিতে স্বল্পমূল্যে পুকুর ভাড়া দেয়া হয়েছে। ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার করে পুকুরে পানি সংরক্ষণ করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার  বলেন, চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু পাট পচানোর পানি না থাকায় চাষিরা সমস্যায় রয়েছেন। বর্তমানে বর্ষা শুরু হয়েছে। অতিদ্রুত পানি সংকট কেটে যাবে বলে আশা করেন তিনি।