বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: সরবরাহে আপাতত কোন সংকট নেই, তারপরও পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে ভারতে রপ্তানি মূল্য বেঁধে দেয়ার অজুহাতে। রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা। অপরদিকে, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে শনিবার যে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, সেই পেঁয়াজ রবিবার বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।
রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি )রবিবার তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
কাওরান বাজারের পেঁয়াজের একজন খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভারত পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেওয়ায় পাইকারি বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন প্রশ্ন তুলেছেন যে ভারতের বর্ধিত মূল্যের পেঁয়াজ আসতে এখনও অনেক দেরি। আগেভাগে এত দাম বেড়ে গেল কেন? তিনি বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হয়ে আছে। কোনো অজুহাত পেলেই দাম বৃদ্ধি করে দেয় এই সিন্ডিকেট ।
ভারতের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম ঠিক রাখতে রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড বা বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের কার্যালয় গত শনিবার জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। জাহাজে পরিবহন ও বিমার খরচ এ দামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। এ সিদ্ধান্ত গতকাল রবিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে রপ্তানির জন্য প্রক্রিয়াধীন এবং ইতোমধ্যে দেশটির কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা পেঁয়াজ নতুন এই মূল্যসীমা থেকে ছাড় পাবে।
দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের মজুত এখন শেষের দিকে। নতুন পেঁয়াজ উঠবে ফেব্রুয়ারির দিকে। তবে, মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠবে ডিসেম্বরে। সারা বিশ্বে মশলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পেঁয়াজ ফসলের বৈশ্বিক আবাদ হয় ২২ লক্ষ হেক্টর জমিতে। বৈশ্বিক উৎপাদন ২২.৯৬
বিলিয়ন মে.টন এবং সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় চীন এবং ভারতে। পেঁয়াজের দেশজ চাহিদা প্রায় ২৬.২৫ লক্ষ মে.টন এবং এর এক-তৃতীয়াংশ
আমদানি দ্বারা মেটাতে হয় এবং মূল আমদানি হয় ভারত থেকে যা আমদানিকৃত পেঁয়াজের ৭৫-৮০%। ২০২০ সালে দেশিয় উৎপাদন
২.৫৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে ৩৩.৬২ লক্ষ মে.টন এবং গড় ফলনের পরিমাণ হেক্টর প্রতি ১৩.২৪ মে.টন। রবি ও খরিপ উভয় মৌসুমে
পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। শীতকালে উৎপাদিত পেঁয়াজ সারা বছর খাওয়া যায়।