বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও: রামরাই দিঘি। ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তর দিঘি। এর সঠিক ইতিহাস এখনো জানা যায় নি। ধারণা করা হয় দিঘিটি পাঁচশ থেকে হাজার বছরের পুরাতন হতে পারে। একসময় এই দিঘি ছিল এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের পানির চাহিদা পূরণের উৎস। এ দিঘিকে ঘিরে নানা লোককথা শোনা যায়। রামরাই দিঘির নামকরণ করা হয় রানি সাগর (২০০২)।প্রতি বছরের মতো এ বছরও ঝাঁকে-ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে রামরাই দিঘিতে। অতিথি পাখির আগমনে মুখর এখন এই দিঘি।
রামরাই দিঘি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা সদর থেকে ৪ কিঃ মিঃ দূরত্বে অবস্থিত। পদমপুর ও উত্তরগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে এটি অবস্থিত। চারপাশে ১২০০এর অধিক লিচু গাছ সহ অন্যান্য গাছ । চারিদিকে যেন সবুজের বিশাল সমারোহ আর দিঘির টলটলে জলরাশি মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। এক অপরূপ সৌন্দর্য বিরাজ করছে দিঘির চারপাশ জুড়ে। বিভিন্ন বর্ণালী পাখির কুজন রামরাই-এর সৌন্দর্যকে আরো অধিক আকর্ষণীয় করে তুলে। শীতের সময় লাখ লাখ অতিথি পাখির দেখা মিলে এখানে। তাদের কিচির মিচির শব্দে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে যায়। অনেকেই পাখিরাজ্য বলে আখ্যায়িত করে থাকে।
শীতের আগমনের সাথে সাথে এই দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে রামরাই দিঘিতে ভিড় জমায় তারা। পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমীরা।
প্রতিবছর শীতের শুরুতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে আসে বাহারি রংয়ের এসব অতিথি পাখি। পাখিরা সুদূর সাইবেরিয়ার হিমশীতল আবহাওয়ার কবল থেকে রেহাই পেতে অভয়াশ্রম হিসেবে বেছে নেয় মিষ্টি শীতের দেশ বাংলাদেশকে। এদেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে তারা। আত্মীয়দের সঙ্গে যেমন আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, রামরাই দিঘির সঙ্গেও তেমনি আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে এসব অতিথি পাখি।