বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩১টি গার্মেন্টস এক্সেসরিজ কারখানার বিপুল পরিমান কাঁচামাল চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে। কারখানাগুলোর বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় খালাস করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কাস্টম হাউস সূত্রে জানানো হয় যে এসব পণ্য আমদানি হয়েছে বন্ডের আওতায়। যেসব কারখানা আমদানি করেছে তাদের এক বছরের প্রাপ্যতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চালানগুলো ছাড়ানোর কোন সুযোগ নেই।
গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং শিল্প মালিকদের কয়েকজন জানান, তাদের এসব কাঁচামালের অর্ডার দেয়া হয়েছিল চীনে করোনভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগে। আমদানি আদেশ পৌঁছতে না পৌঁছতে সেখানে সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। তাই শিপমেন্ট হয়নি। অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর শুরু হয় শিপমেন্ট। যেসব কারখানার লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে, সেসব কারখানার চালান খালাস করে নেয়া হয়েছে। আর যেগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেগুলোর চালান আটকে গেছে।
আরও জানান, চলমান সাধারণ বন্ধের মধ্যে পৌঁছেছে চালানগুলো। কিন্তু বন্ড কমিশনারেট বন্ধ থাকায় লাইসেন্স নবায়ন করা যাচ্ছে না। এতে আটেকে গেছে চালানগুলো। অপরদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরে বিশাল জট তৈরি হয়েছে আমদানি পণ্যের। অবস্থা এমন যে জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাসে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত পণ্য খালাস নিতে উদ্বুদ্ধ হয় সে লক্ষ্যে কয়েকদিনের জন্য স্টোর রেন্ট মওকুফের বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে। সেই সুযোগ নিতে পারছেন না ঐসব কারখানা মালিকরা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)’এর প্রথম সহ-সভাপতি খন্দকার লতিফুর রহমান আজিম বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধিকে এ ব্যাপারে জানিয়েছেন যে বর্তমান বন্ধের মধ্যে ডকুমেন্টস হালনাগাদ করা ও বন্ড লাইসেন্স নবায়ন সম্ভব না হওয়ায় কাঁচামালের চালান আটকে থাকার বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। চালানগুলো খালাসে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। বহু কারখানার কাঁচামাল মজুদ একেবারে শূন্যে। সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, অনেক প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স নবায়নের তারিখ অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, আরও প্রতিষ্ঠানের অতিক্রান্ত হয়ে যাবে সাধারণ বন্ধের মধ্যে। কারও কারও ইউডি থাকলেও ইউপি পাওয়া যাচ্ছে না বন্ড কমিশনারেট বন্ধ থাকায়।
খন্দকার লতিফুর রহমান আজিম জানান, চট্টগ্রামে যেসব গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং শিল্পের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে তাদের ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছেন এখানকার বন্ড কমিশনার। আবেদন সাপেক্ষে প্রত্যয়নপত্র ইস্যু অথবা নবায়ন করে দেয়া হবে চট্টগ্রামে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আরও বেশ কিছু বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-বন্ডেড ওয়্যারহাউসের ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত কাঁচামাল কারখানা এলাকার বাইরে রাখার ব্যবস্থা করা, ওয়্যারহাউসে রাখা মালের বন্ডের মেয়াদ বাড়ানো, যাচাইকালে মালামালের ঘাটতিজনিত শাস্তি আরোপ না করা ইত্যাদি।
গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং শিল্পের সংখ্যা ১৭০০ এর বেশি।তাদের তৈরি পণ্যের ৯৫ ভাগ সরবরাহ করা হয় রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে।