বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
যশোর: সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুদখোর মহিলাদের চাপে পড়ে আত্মহত্যার ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। আসামীদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগ ওঠেছে যে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দফায় দফায় বাড়ি এসে অপমানে আত্মহননের পথ বেছে নেন লাভলী শারমিন (৪৫)। তার ছেলে নিশাত আল মামুন চার নারীর নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি রুমা বেগমকে (৩৮) আটক করেছে। রুমা ওই এলাকার নূর আলীর স্ত্রী। অন্য আসামিরা হলো, সোহাগ হোসেন ওরফে চোর সোহাগের স্ত্রী পারুল খাতুন (৩৬), শুকুর আলীর স্ত্রী ববিতা খাতুন (৪০) এবং হাফিজুর রহমান ওরফে মাছো হাফিজের স্ত্রী শিরিন বেগম (৪০)।
এজাহারে মামুন উল্লেখ করেছেন, তার মা বছর তিনেক আগে ব্যবসার প্রয়োজনে উচ্চ সুদে পারুলের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধার নেন। এরপর ওই টাকা পরিশোধ করে দেয়া হয়। কিন্তু সুদের টাকার জন্য তার মায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। গত ২০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে ওই চারজন তাদের বাড়িতে আসে এবং টাকা দাবি করে। কিন্তু সুদের টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় আসামিরা তার মাকে প্রচণ্ড গালিগালাজ করে এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে তাদের অভাব অনটনের সংসারে পিতার সাথে মায়ের মনোমালিন্য শুরু হয়।
গত ৩০ নভেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে আসামিরা ফের তাদের বাড়িতে আসে। সে সময় সুদের টাকা দিতে না পারায় তার মাকে প্রচণ্ড গালিগালাজ করে। টাকা দিতে না পারলে তার মাকে আত্মহত্যা করতে পর্যন্ত বলে। সেই থেকে তার মা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় দেখা হলে তারা নানাভাবে কটু কথা বলে। গত ৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মা অপমান সহ্য করতে না পেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার আগে বাম হাতের উপরে ও নিচে লিখে যায় আমার মৃত্যুর জন্য রবি, ‘সুদখোর পারুল, রুমা, ববিতা দায়ী।’ বাম হাতের তালুতেও সুদখোর পারুল লেখা ছিলো। তার মায়ের মৃত্যুর জন্য সুদখোর ওই নারীরা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। এবং আত্মহত্যায় বাধ্য করে বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
কোতয়ালি থানার এসআই ইয়াসিফ আকবর জয় জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শহরের বারান্দীপাড়া থেকে আসামি রুমাকে আটক করা হয়। বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।