বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
খুলনা:খুলনার কয়রা মাতিয়ে গেলেন সুইডেনের রাজকন্যা ক্রাউন ভিক্টেরিয়া। অজপাড়া গাঁয়ের নারীদের নানা সমস্যার কথা শুনলেন তিনি। এ সময় গ্রামের একেবারে সাধারণ মানুষের সাথে মিলেমিশে একাকার হলেন।
এসময় সুপেয় পানির সমস্যার কথা সুইডেনের রাজকন্যা ক্রাউন ভিক্টেরিয়াকে জানালেন মহেশ্বরীপুর নয়ানী নামযজ্ঞ পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা। ঐ কমিটির সদস্য লিপিকা বিশ্বাস রাজকন্যাকে জানালেন, খাবার পানির সংকটের কথা। তিনি রাজকন্যার উদ্যেশ্যে লবনাক্ত পানির ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেন এবং লজিক প্রকল্প এলাকায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরী করায় এলাকার মানুষ যে মহাখুশি তা তারা রাজকন্যাকে জানান। তারা বেশি করে এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থার পাশাপাশি আরও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের দাবি জানান।
সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ১৯ মার্চ সকাল ৮ টায় খুলনার কয়রা উপজেলার গীলাবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মিত হেলিপ্যাডে সফর সঙ্গীসহ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২টি হেলিকপ্টারে অবতরন করেন। পরে তিনি উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় লোকজনের জীবনমান নিজ চোখে দেখার জন্য মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানী নামযজ্ঞ মাঠে হাজির হন। সেখানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়নধীন ও ইউএনডিপির সহযোগিতায় লজিক প্রকল্পের নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিদর্শন করেন।
এসময় সিআরএফ গ্রুপের জীবিকায়নে ভেড়া পালন, মৎস্য চাষ ও সবজি চাষ পর্যবেক্ষণ করেন এবং পানি কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এরপর রাজকন্যা ১০ টা ২৫ মিনিটে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদে পৌছান এবং ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে বয়স্ক, বিধবা ভাতা, ই-পাসর্পোট ও ই-পর্চার কার্যক্রম দেখেন। পরে মধুমতি ব্যাংকে একাউন্টের মাধ্যমে রেশমা আক্তারকে দিয়ে ৫শ’ টাকার ডিপোজিট কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পরে সেখান থেকে তিনি সড়ক পথে সাড়ে ১১ টায় কয়রা সদরে স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট অব পোস্ট অফিসের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
তিনি এ সব কার্যক্রমের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের অনুভূতির কথা শুনেছেন ও জীবন জীবিকা কার্যক্রম অবলোকন করেছেন। তিনি পৌনে বারোটায় কয়রা ত্যাগ করেন।
এ সময় রাজকন্যার সফরসঙ্গী হিসাবে ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উলরিকা মোদের, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বানিজ্য সুইডিশ মন্ত্রী জোহান ফরসেল, কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামানসহ সরকারি কর্মকর্তা, জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও বে-সরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রীয় অতিথির কয়রায় আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১ হাজার ৬০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা নজরদারিসহ সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।