ঢাকা: দেশের চলমান বন্যায় আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। জেলাগুলো হলো-ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। বন্যা প্লাবিত উপজেলা ৭৭টি এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ও পৌরসভা ৫৮৪টি। ১১ জেলায় মোট ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। মৃত লোকসংখ্যা ১৩ জনের মধ্যে মহিলা ২ জন। কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে ১ জন, চট্টগ্রামে ২ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১ জন, লক্ষীপুরে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন মৃতুবরণ করেছে। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন লোক ও ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এসব কথা বলেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ মে.টন চাল এবং ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩৫ লাখ টাকা ও ১ হাজার ৬শ মে.টন চাল; কুমিল্লায় ৪৫ লাখ টাকা ও ২ হাজর ৬শ মে.টন চাল; ফেনীতে ৬২ লাখ টাকা, ২ হাজার ৯শ মে.টন চাল ও ৬ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; নোয়াখালীতে ৪৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৬শ মে.টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; সিলেটে ৪৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৬শ মে.টন চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; মৌলভীবাজারে ৩০ লাখ টাকা, ২ হাজার ৩৫০ মে.টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; হবিগঞ্জে ৩৫ লাখ টাকা, ২ হাজার ৪শ মে.টন চাল ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার; ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১৫ লাখ টাকা, ১ হাজার ৬শ মে.টন চাল; লক্ষ্মীপুরে ১০ লাখ টাকা, ৫শ মে.টন চাল; খাগড়াছড়িতে ১০ লাখ টাকা, ৫শ মে.টন চাল এবং কক্সবাজারে ২০ লাখ টাকা, ৫শ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।
বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসককে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে এক সাথে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্ট গার্ড ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা এবং সচিব মহোদয় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
-তথ্যবিবরণী