বন্দরকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে: শাহেদ সরওয়ার
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: কলম্বো থেকে কন্টেইনার নিয়ে জাহাজ বহির্নোঙরে পৌঁছে ৫দিনে, আর বার্থ পেতে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ১০ দিন।
চট্টগ্রাম বন্দরের চলমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এই তথ্য জানিয়ে কে লাইন বাংলাদেশ লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহেদ সরওয়ার অভিমত দেন যে আমদানিকারকদের বন্দরকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এটাই হবে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য স্থায়ী সমাধান। বলেন, বন্দরকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার, সেখানে রেখে পণ্য বিক্রি করলে কেবল চট্টগ্রাম নয়, জাপান ইউরোপের উন্নত বন্দরগুলোও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। আমদানিকারকরা যাতে কোন অবস্থাতে বন্দরে অতিরিক্ত সময় ধরে পণ্য ফেলে না রাখেন তা নিশ্চিত করতে হবে ঋণপত্রকারি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে। তবে, বন্দর চলবে সাবলীল গতিতে।
মঙ্গলবার বন্দরে কাজ চলছিল ১১টি কন্টেইনার জাহাজে। আর বহির্নোঙরে কন্টেইনার নিয়ে অপেক্ষমাণ ছিল ৩৫টি। দুই, পাঁচ এবং বারো নম্বর বার্থ ছিল খালি। অপরদিকে, কন্টেইনার ছিল ধারণক্ষমতার অধিক। ৪৯,৩১৩ টিইউস।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের পরিচালক শাহেদ সরওয়ার বিজনেসটুডে২৪ কে আরও বলেন, বন্দরে এ রকম সংকট দীর্ঘ সময়ের সাধারণ ছুটি, লকডাউনে প্রকট আকার নিলেও প্রকৃতপক্ষে এই প্রবণতা অনেক দিন ধরে চলে আসছে। আমদানিকারকরা ক্রেতার অপেক্ষায় পণ্য রেখে দেন বন্দরে। দ্রুত ডেলিভারি নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। তৈরি পোশাক উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কাঁচামাল রাখার কমবেশি জায়গা রয়েছে সব কারখানায়। আমদানি করা কাঁচামাল দ্রুত ডেলিভারি নিয়ে গেলে বন্দরে এমন সংকট হতো না। শুধু পোশাক শিল্পের কাঁচামাল নয়, আদা রসুন আপেলের মত পচনশীল জিনিসের আমদানিকারকরাও কম দায়ী নন সংকটের জন্য। দ্রুত ডেলিভারি নিচ্ছেন না তারাও। ডেলিভারি নিয়ে হিমাগারে রাখলে যে খরচ সে তুলনায় বন্দরে রাখা কম খরচের এবং নিরাপদ বিবেচনায় পচনশীল পণ্য ফেলে রাখেন দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।
বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নেয়ায় ধীরগতিরে কারণে বর্তমান মহাসংকট। আগে ৭২ ঘণ্টায় কন্টেইনার খালাস করে ফিরতি যাত্রায় যে রপ্তানি পণ্য পাওয়া যেত বর্তমানে তাও পাওয়া যাচ্ছে না। এক একটি জাহাজের রপ্তানি পণ্য নেয়ার সক্ষমতা অন্ততঃ ১২০০ টিইউস। আর ফিরতে হচ্ছে দু’তিন শ’ টিইউস নিয়ে।বার্থ পাওয়ার পর ৭২ ঘণ্টার স্থলে ১২০ ঘণ্টা লাগে কন্টেইনার খালাসে। শাহেদ সরওয়ার জানান, বহির্নোঙরে ৮/১০ দিন ধরে অপেক্ষায় থাকা, কন্টেইনার লোডিং ও ডিসচার্জিংয়ে ধীরগতি, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফিরতে না পারার কারণে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়ে গেছে প্রচুর, কিন্তু কমে গেছে আয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আরও ৬টি আইটেম অফডকে নেয়ার অনুমোদনকে ভাল উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন। তবে, তাতে তেমন কোন সুফল আসবে না বলে জানিয়ে বলেন, প্রয়োজন ছিল এমন পণ্যের অনুমোদন দেয়া, যেগুলো ১০/১৫ হাজার কন্টেইনারে ভর্তি। আশা করেন যে রাজস্ব বোর্ড তা বিবেচনায় অনুমোদন প্রদান করবেন। সেটা করা হলে কম সময়ের মধ্যে সুফল মিলবে জট নিরসনে। এই অভিমত শাহেদ সরওয়ারের।