বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: সিঙাপুরভিত্তিক জাহাজ পরিচালনাকারি কয়েকটি কোম্পানির জোট এশিয়ান ফিডার ডিসকাশন গ্রুপ (এএফডিজি) জাহাজ ও কন্টেইনার জট দ্রুত নিরসনের ব্যবস্থা নিতে বলেছে চট্টগাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে। অবিলম্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অতিরিক্ত ব্যয় পুষিয়ে নিতে সারচার্জ আরোপের সম্ভাবনাও জানানো হয়েছে।
এএফডিজি’র ডিসকাশন গ্রুপ চিটাগাং ফিডার ট্রেড কমিটি (সিএফটিসি) বন্দর চেয়ারম্যানকে এ ব্যাপারে ইমেইল পাঠিয়েছে। সমন্বয়কারি এস সি লিম মেইলটি পাঠিয়েছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সোমবার সিঙাপুরে এএফডিজি নির্বাহিরা বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এরপর পাঠানো হয়েছে বন্দর চেয়ারম্যানকে মেইল । উল্লেখ করা হয়, ফিডার জাহাজকে কন্টেইনার নিয়ে এসে বার্থ পাওয়ার জন্য ১১ দিন থেকে ১৩ দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। আর বার্থে গিয়ে কন্টেইনার খালাসে ৩দিনের স্থলে লেগে যায় ৬ দিন থেকে ৮ দিন পর্যন্ত। তাতে তাদের ব্যয় বেড়ে গেছে প্রচুর। ফিরতি পথে প্রত্যাশিত রপ্তানি কার্গোও পাওয়া যাচ্ছে না করোনাজনিত পরিস্থিতিতে।
মেইলে সিএফটিসি আশা করেছে যে যথাসম্ভব কম সময়ের মধ্যে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং উৎপাদনশীলতা আগের পর্যায়ে আসবে। তা না হলে বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নেয়ার জন্য সিএফটিসিকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইতিমধ্যে দু’টি এমএলও চট্টগ্রাম বন্দরমুখী রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনারে কনজেশন সারচার্জ আরোপের নোটিস দিয়েছে। ওসেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস ( ওএনই ) প্রাইভেট লিমিটেড তা কার্যকর করবে ৩ মে থেকে। প্রতি কন্টেইনারে এর পরিমান ১ হাজার মার্কিন ডলার। স্বাভাবিক ফ্রেইটের সাথে যোগ হবে সারচার্জ। সিএমএ সিজিএম কার্যকর করবে ১০ মে থেকে। তারা কনজেশন সারচার্জ আদায় করবে প্রতি কন্টেইনারে ১৩০০ ডলার করে।
সমুদ্রপথে কনটেইনার পরিবহনের ৯৮ শতাংশ এই বন্দর দিয়ে পরিবহন হয়। এই বন্দরে সমস্যা হলে দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জেটিতে ভিড়ার জন্য এখন বহির্নোঙরে অপেক্ষায় রয়েছে ৩৬টি জাহাজ। ১১ এপ্রিল থেকে অপেক্ষমাণ পর্তুগিজ পতাকাবাহী জাহাজ আস সুফিয়া। ১৫ দিন পর সেটা ভিড়বে। ১৩ এপ্রিল থেকে অপেক্ষায় রয়েছে সিঙাপুর পতাকাবাহী কোটা ওয়াঙ্স। ২৭ এপ্রিল এটাকে বার্থে আসার কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। কমবেশি এমন অবস্থা সব জাহাজের। আর গত বছর এ সময়েও পৌঁছার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বার্থ পেয়েছে কন্টেইনার জাহাজ। অর্থাৎ বহির্নোঙরে পৌঁছে তেমন অপেক্ষা করতে হয়নি জেটিতে ভিড়ার জন্য। বন্দরে কন্টেইনার স্তূপ হয়ে আছে ৪৭,৩৪৫ টিইউস।
কন্টেইনারে আমদানি করা পণ্যের বড় অংশই পোশাকশিল্পের কাঁচামাল (কাপড়, তুলা, সুতা, বোতামসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম)। সাধারণত একটি জাহাজে গড়ে ১ হাজার কন্টেইনারে বিভিন্ন ধরনের আমদানি পণ্য থাকে।
নৌ প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময় করবেন কর্মকর্তাদের সাথে। সকাল ১১ টায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে তিনি মত বিনিময় সভাটি করবেন। চলমান সংকট পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপ্রস্তুতি বিষয়ে আলোচনা হবে সভায়।