বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রংপুর: গত কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলে বৈরি আচরণ করছে আবহাওয়া। ঘন কুয়াশায় সূর্যালোক ঢেকে আছে। আর এমন পরিস্থিতি অত্যন্ত ক্ষতিকর আলুর জন্য, লেট ব্লাইট হতে পারে। উৎপাদন ক্ষতির আশঙ্কায় রংপুরের চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে আলুর বাজার চড়া। এমন কি আলুর রাজধানী খ্যাত রংপুরেই ৮০ টাকা দর ছিল কেজির। এমন বাজার কৃষকদের অধিক উৎপাদনে উৎসাহিত করে। তা বেশ বুঝা যায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব থেকে। তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবারে আলু আবাদ। এ অঞ্চলে বছর চারেক আগেও আবাদ হতো এক হেক্টরের চেয়ে কম জমিতে। সে ক্ষেত্রে এবারে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টরে আলু আবাদ হয়েছে। আর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬০২ হেক্টর।
কৃষকরা জানালেন, একদিকে অধিক পরিমান জমিতে আবাদ হওয়ায় ব্যাপক দর পতনের আশঙ্কা, অন্যদিকে আবহাওয়ার বৈরি আচরণে ফসল মার খাওয়ার সম্ভাবনায় তারা চরম দুশ্চিন্তায়। লেট ব্লাইট প্রতিরোধে মাঠে কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার বালাইনাশক ছিটাতে হয়। ছিটানোর জন্য কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, শৈত্য প্রবাহের মধ্যে তারা কাজ করতে রাজি নন। যে স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক আগ্রহী তাদেরকে দিতে হচ্ছে অস্বাভাবিক মজুরি। কীটনাশকের দামও বাড়তি।
রংপুর কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানিয়েছেন, আলু ক্ষেতের জন্য সবচেয়ে বেশি শঙ্কার কারণ ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা বেশিদিন থাকলে আলুর লেট ব্লাইট হতে পারে। তা প্রতিরোধে নিয়মিত ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত মওসুমে রংপুরে রেকর্ড পরিমানে আলু উৎপাদিত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বাজার ছিল অস্বাভাবিক চড়। উৎপাদকরা দাম না পেলেও একটি সিন্ডিকেট চক্র ও দুটি বড় প্রতিষ্ঠান আগাম আলু কিনে হিমাগারে রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকে হিমাগার থেকে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হয়েছে। হিমাগার মালিকদের যদি আলুর মজুদ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় তাহলে চড়া দরে ভোক্তাদের কিনতে হবে না বলে অভিমত বাজার বিশেষজ্ঞদের।