Home কৃষি উত্তরাঞ্চলে আগাম মুকুলে ছেয়ে গেছে আমগাছ

উত্তরাঞ্চলে আগাম মুকুলে ছেয়ে গেছে আমগাছ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী: অনুকূল আবহাওয়া পেয়ে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের গাছে গাছে গজাচ্ছে আমের মুকুল। স্বাভাবিক সময়ের প্রায় একমাস আগেই মুকুলে ভরে যাচ্ছে গাছ। তবে, বাগান মালিকরা এই মুকুল টিকবে কী না তা নিয়ে রয়েছেন সংশয়ে।

এবারে রাজশাহী এবং উত্তরের বিভিন্ন জেলায় কুয়াশার ফাঁকে ফাঁকে ঝলমলে রোদ অনুকূল আবহাওয়া তৈরি করেছে আম গাছের জন্য । অন্যান্য বছরের মত এ বছর ঘন কুয়াশা ছিল না। মেঘলা আকাশ ছিল না। অবশ্য, গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে প্রকৃতি। এসব কারণে আগাম মুকুল নিয়ে চাষিদের শঙ্কা কিছুটা বেড়েছে। রোদের তাপ না পেলে এবং বেশি সময় ধরে প্রকৃতি কুয়াশায় ঢেকে থাকলে মুকুল ঝরে পড়ার ব্যাপক আশঙ্কা থাকে। এতে আমের ফলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

কৃষিবিদদের মতে,ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমের মুকুল ফোটার অনুকূল আবহাওয়া। তবে চলতি মরশুমে আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্যই গাছগুলিতে আগাম মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। শীত থাকলেও এখন তাপমাত্রা একটু বেশি। যা আমের মুকুল ফোটার উপযোগী । মৃদু শীত, উষ্ণ আবহাওয়া আমের মুকুল গজানোর ত্বরান্বিত করে। তাই এবার জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়েই মুকুল গজাতে শুরু করেছে। অকাল মুকুল নয়। দুঃশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। পরিচর্যা করলেই আমের ফলন ভালো হবে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে মুকুলে ভরে যেতে পারে আমবাগান।

বাগান মালিক করিম শেখ গভীর দুশ্চিন্তা নিয়ে বললেন, “এবার আম গাছে খুব আগেই মুকুল গজিয়ে গিয়েছে। আবহাওয়ার জন্য এটা কোনও কোনও বছর হয়ে থাকে। কিন্তু ভয় হচ্ছে, এই আগাম মুকুল শেষ পযর্ন্ত টিকে থাকবে তো?” চাঁপাই নবাবগঞ্জের মুজিবুর রহমান মনে করেন,“এখন বৃষ্টি না হলে এই মুকুল রক্ষা করা যাবে না। তাই মুকুলে কীটনাশক ও পানি স্প্রে করতে হবে।”

জানা যায়, অতিরিক্ত গুটি ঝরে না পড়লে আমের আকার ছোট হয়। আমের গুণগত মান ও ফলন কমে যায়। প্রতিটি মুকুলে একটি করে গুটি থাকলেই আমের ব্যাপক ফলন হবে।  আমবাগানের মাটিতে রসের অভাব হলেও আমের গুটি ঝরে যায়। এজন্য গাছের চারপাশে নিয়মিত পানি দিতে হবে। বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত ১৫ দিন অন্তর পানি দিলেই সমস্যা থাকবে না। আম বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আগাছামুক্ত ও খোলামেলা অবস্থায় রাখতে হবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার বাগানগুলোতে আগাম মুকুল এসেছে। গত বছর মুকুল এলেও কুয়াশার কারণে মুকুলের বেশি ক্ষতি হয়েছিল। ফলে ফলনও কম হয়েছিল। এবার বেশি মুকুল হবে বলে আশা করছি। আর চাষিদের গাছের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শও দিচ্ছি।

রাজশাহী অঞ্চল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন বলেন, প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী বড় আমগাছে কোনো বছর মুকুল কম এলে পরের বছর বেশি আসে। সেই হিসাবে বড় গাছগুলোতে মুকুল এবার বেশি আসার কথা। আর ছোট গাছ যারা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে রোপণ করেন তারা যথাযথ যত্ন নেন। এ কারণে ছোট বাগানগুলোতে সব মৌসুমেই মুকুল বেশি হয়। এবারের আবহাওয়া আমের জন্য এখন পর্যন্ত উপযোগী আছে। আর দীর্ঘ কুয়াশার কবলে পড়লে চাষিদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।