Home First Lead ভারত বাদ, পাকিস্তান থেকে আমদানি হচ্ছে চিটাগুড়

ভারত বাদ, পাকিস্তান থেকে আমদানি হচ্ছে চিটাগুড়

পাকিস্তান থেকে জাহাজে এল চিটাগুড়, ব্যান্ড বাজিয়ে স্বাগত । ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বাগেরহাট: গবাদি প্রাণীর জন্য হুমুখী পুষ্টিদায়ক তরল খাদ্য এবং মাছের মিনারেলের ঘাটতি পূরণের জন্য এতদিন প্রতিবেশি ভারত থেকে ব্যবসায়ীরা চিটাগুড় আমদানি করতেন। সাম্প্রতিককালে ভারত পণ্যটি রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ হারে রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে কমদামে বিকল্প উৎস হিসেবে পাকিস্তান থেকে আমদানি শুরু হলো। সেখান থেকে প্রথম চালানে এল সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। 

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলায় প্রথমবারেরমত নোঙর করলো পাকিস্তান থেকে আমদানি করা চিটাগুড়ের চালান নিয়ে জাহাজ। জাহাজটি করাচি বন্দর থেকে এসেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হওয়ায় বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন, নাবিক, আমদানিকারক ও শিপিং এজেন্ট প্রতিনিধিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমোডর শফিকুল ইসলাম, আমদানিকারক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পি এন্ড পি ট্রেডিং এর সত্ত্বাধিকারী আনোয়ারুল হক, জাহাজের ক্যাপ্টেন এনগুয়িন ট্রংসহ বন্দরের কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমোডর শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার মোংলা বন্দরের জন্য একটি বিশেষ দিন, আমার জন্যও বিশেষ দিন। পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করা হল। আগে ভারত থেকে চিটাগুড় আমদানি করা হতো। কিন্তু হঠাৎ করে ভারত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। যার কারণে আমাদের খরচ বেড়ে গেছে। তাই পাকিস্তান থেকে অনেক কম দামে ও কম খরচে চিটাগুড় আমদানি করা শুরু হল। এই আমদানি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। আমদানিকারকদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্র বন্দরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন চিটাগুড় নিয়ে পানামা পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯ ভিড়েছে। গত ২২ জানুয়ারি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা করে। বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরের ৮ নাম্বার জেটিতে অবস্থান নিয়েছে। জাহাজের চিটাগুড় খালাস করে মোংলা ইউনাইটেড রিফাইনারি অ্যান্ড বাল্ক স্টোরেজ লিমিটেডে পরিশোধন করা হবে। এরপরসিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়িতে সড়ক ও নৌপথে সরবরাহ করা হবে। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন ফিড কোম্পানিকে সরবরাহ করা হবে।

আখ থেকে চিনি তৈরির সময় চিনি কলে যে গাড়, বা চিনির সমৃদ্ধ উপজাত পণ্য হিসাবে অতিরিক্ত যে অংশটি সংগ্রহিত হয় সেটিউ চিটাগুড়। বিভিন্ন জেলাতে চিটাগুড়কে বিভিন্ন নামে জানে যেমন – লালি, মাতগুড়, রাব ইত্যাদি। মাছ চাষে চিটাগুড় উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার হচ্ছে।

চিটাগুড় গবাদি প্রাণীর জন্য একটি বহুমুখী পুষ্টিদায়ক তরল খাদ্য। তবে প্রচুর এনার্জি বা শক্তি ও মিনারেলের উৎস হিসাবে বেশি মুল্যায়িত হয়।

চিটাগুড় মূলত খুবই ভালো একটা এনজাইম। যা মাছের মিনারেলসের ঘাটতি, শক্তি উৎপন্নতে, রুচিবর্ধক, হজমে চমৎকার কাজ করে। বিভিন্ন খাদ্যে ফার্মেন্টেশন করতে চিটাগুড় ব্যবহার হয়। প্রিবায়োটিক তৈরিতে চিটাগুড়ের ভূমিকা সর্বাধিক। চিটাগুড় ব্যবহারের কারণে পানির পিএইচ নিয়ন্ত্রনে থাকে ও কার্বন ডাই-অক্সাইড এর পরিমান হ্রাস পায়। উপকারী ব্যাক্টেরিয়া তৈরির মাধ্যমে, পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

বর্তমানে আধুনিক মাছ চাষে পানির গুনাগুন ঠিক রাখার জন্য অনেক সচেতন চাষীগণ চিটাগুড় ব্যবহার করছেন।