বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: মেঘনা নদীতে প্রায় ৮ মণ (৩১০ কেজি) ওজনের বিরল একটি শাপলাপাতা মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। অনেকে এ মাছটিকে পানপাতা মাছ নামে চিনে থাকেন। তবে বিদেশিদের কাছে এটি “রেফিন ফিস/স্টিং ফিস নামে পরিচিত।
ব্যবসায়ী মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৮ মন ওজনের মাছটি উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হারিয়া এলাকার জেলে হাবিবুল্লাহ মিয়ার জালে মেঘনা নদীর চাঁদপুর মোহনায় ধরা পড়ে। মাছটি পিকআপ-ভ্যানে করে বৈদ্যেরবাজার-ঘাট এলাকায় মাছবাজারে নিয়ে আসলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় কিনে রাখার পর মাছটি কেটে ৭ শত টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি।
সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, মেঘনা নদীতে প্রায় ৮ মন ওজনের একটি শাপলাপাতা মাছ জেলেদের জালে ধড়া পড়ার কথা শুনেছি। বাজারে মাছটির চাহিদা রয়েছে। বিরল প্রজাতির এই সামুদ্রিক মাছটিকে স্থানীয়ভাবে হাউস মাছ বলা হয়। তবে এটি শাপলাপাতা মাছ নামেই পরিচিত।
আকৃতি শাপলা পাতার মতো হওয়ায় এটি শাপলা পাতা মাছ নামে পরিচিত। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ষ্টিংরে ফিস। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) শাপলাপাতা মাছকে প্রায় বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০০ প্রজাতির শাপলাপাতা থাকলেও বাংলাদেশে ৫৬ প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ পাওয়া যায়। এই মাছ প্রজাতি ভেদে ৮০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী এই মাছ শিকার ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
শাপলাপাতা মাছ সাগরের গভীরে বিচরণ করলেও বংশ বিস্তারের সময় মাছগুলো তীরের কাছাকাছি আসে। আর আটকে পড়ে জেলেদের জালে।
সমুদ্রবেষ্টিত অঞ্চলের মানুষের কাছে এই শাপলাপাতা মাছ খুবই সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। এছাড়া প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে মাছটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর ও বনবিভাগের নীরব ভূমিকায় শিকার নিষিদ্ধ এ মাছের অবাধ বাজারজাত দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা নিষিদ্ধ শাপলাপাতা শিকার চলতে থাকলে এক সময় এ মাছ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা বিরাজমান।