বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, লালমনিরহাট: রং বেরং-এর ফুলকপি চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর এলাকার বছর পঞ্চান্নের পটু মিয়া। রুদ্রেশ্বর এলাকার এক কৃষক পটু মিয়া। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করেই মেলে সাফল্য। দিনে দিনে বাড়ছে চাহিদা। বাজারে নানা রঙের ফুলকপির কদর দিন-দিন বাড়ছে। তাই প্রবল উৎসাহে রঙবেরঙের ফুলকপি চাষে দিন-রাত এক করে দিচ্ছেন রুদ্রেশ্বর এলাকার এই চাষি।
এখন তার মাঠজুড়ে সবুজ পাতার মাঝে গোলাপি ও হলুদ রঙের ফুলকপি শোভা পাচ্ছে। দূর থেকে বোঝা না গেলেও কাছ থেকে কপির এমন ভিন্ন রঙ মুগ্ধ করবে। বেশ ভালো দামে রমজান মাসে বিক্রির আশা করছেন তিনি। কালীগঞ্জ উপজেলায় সাদা রঙের কপি নিয়মিত চাষ হলেও এ বছর প্রথম রঙিন কপি চাষ হচ্ছে। খরচ কম হওয়ায় লাভ বেশি। রঙিন কপির চাহিদা রয়েছে দেশের বাজারে। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ছুটে আসছেন এ কপি দেখতে। এটি সারা বছরে চাষ করা যায় বলে কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকরা উচ্চ মূল্যের এ জাতের কপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
পটু মিয়া জানান, রঙ্গিলা হলুদ জাতের। চারা তৈরির জন্য বীজতলায় রোপণ করে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। ২৫-৩০ দিনের মধ্য চারা লাগানোর উপযুক্ত হয়। এরপর বীজতলা থেকে চারাগুলো সংগ্রহ করে জমিতে আবাদের পর নির্দিষ্ট পরিমাণ সার, কীটনাশক ও সেচসহ সব ধরনের পরিচর্যা করতে হয়। গাছ বড় হওয়ার পর ছোট ছোট গুঁটি বাঁধতে শুরু করে। তারপর ৬৫-৭৫ দিনের মধ্য কপি বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয়। নারী উদ্যোক্তা রাবেয়া খাতুন জানান, হাটে সবজি বিক্রি করে গ্রামের ভেতর দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হলুদ ও গোলাপি রঙের কপি দেখা খেতের সামনে দাঁড়াই। রঙিন কপি এর আগে কখনও দেখিনি। কপি দেখে খুব ভাল লাগলো। বীজ পেলে এ জাতের কপি চাষ করব। রঙ দেখে মানুষ খেতে ভিড় করবে।
আরও জানান, এই ফুলকপি চাষ করে তিনি রীতিমতো খুশি। এলাকার অন্য চাষিরাও এই চাষ দেখে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আগামী বছর এই রঙিন ফুলকপির চাষ তিনি আরও বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে বৃন্দাবনচক গ্রামের এই কৃষকের নতুন চাষ সাড়া ফেলে দিয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি জানান, কালীগঞ্জের মাটি কৃষির জন্য উর্বর। এখানে সব ফসল চাষ করা সম্ভব। উচ্চ মূল্যের ফসল চাষে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। রঙিন কপির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিক্রি শুরু হয়েছে। দাম ভালো পাচ্ছে। খরচ তুলনামূলক কম। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়। উপজেলায় বড় পরিসরে এ কপি করতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।