Home First Lead দিশেহারা কাঠ ব্যবসায়ীরা, বাড়ছে ঋণের বোঝা

দিশেহারা কাঠ ব্যবসায়ীরা, বাড়ছে ঋণের বোঝা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম:  করোনাভাইরাস পরিস্থিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কাঠ ব্যবসায়ীরা। বিক্রি না থাকায় ভারি হচ্ছে তাদের ঋণের বোঝা।

এক ব্যবসায়ী জানালেন, ‘এমনিতে প্রায় বছর খানেক ধরে তেমন ভাল যাচ্ছিল না কাঠের ব্যবসা। করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তা একেবারে সংকটাপন্ন।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমদানিকৃত কাঠের কয়েকটি চালান পড়ে আছে বন্দরে। টেকনাফ স্থল বন্দরেও কাঠভর্তি কয়েকটি বোট ভাসমান। শ্রমিক  ও পরিবহন সংকটের কারণে খালাস করা হচ্ছে না।

চিটাগাং ডিভিশনাল টিম্বার মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ওমর উদ্দিন আনসারী বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধিকে বললেন,  ‘ না। একেবারে কোন সাড়া শব্দ নেই, নড়াচড়া নেই। লকডাউনের শুরু থেকে সব বন্ধ। পাইকারি, খুচরা বিক্রেতা সবাই হাত-পা গুটিয়ে বসে রয়েছেন। বন্ধ করাতকলসমূহ ‘

কাঠের আমদানিকারক, বড় ছোট ব্যবসায়ী, করাতকল মালিক সবাই বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। বেচা-বিক্রি বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই ব্যাংকের টাকার সুদ। যখন ব্যাংকের ঋণের টাকা সমন্বয় করতে হবে তখন ব্যবসার জন্য আর কোন অর্থ অবশিষ্ট থাকবে না বলে উল্লেখ করেন ফিরিঙ্গিবাজার ব্রিজঘাটার বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এএমএএস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল-এর স্বত্ত্বাধিকারী মো. ওমর উদ্দিন আনসারী ।

কাঠ ব্যবসায়ীদের সাথে সাথে তাদের কর্মচারি, শ্রমিকরাও পড়েছেন দুরবস্থায়। চরম দৈন্যদশায় করাতকল এবং ফার্ণিচার কারখানা ও দোকানের কর্মি, দিনমজুর  এবং কাঠমিস্ত্রিরা । নিতান্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। কাঠ ব্যবসার সাথে অনেক রকমের কাজ। ট্রাক থেকে কাঠ গুদামে নেয়া, মাপজোখ করা ইত্যাদি হরেক রকমের কাজ। এসব কাজ করে এক একজন মাসে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারতেন। তাদের সবাই বেকার।

নগরীতে কাঠের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা কেন্দ্র ফিরিঙ্গিবাজার। সারি সারি কাঠের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছেন কাঠের খুচরা ব্যবসায়ী। আবার রয়েছে বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছাড়াও আশে-পাশেও সরবরাহ করা হয় কাঠ। চলমান অবস্থায়  আমদানিকারক, খুচরা বিক্রেতা  সবার ব্যবসা বন্ধ বলে জানালেন ফিরিঙ্গিবাজারের ব্যবসায়ীরা।

দেশে কাঠের সিংহভাগ চাহিদা হলো ঘরবাড়ি ও দোকান-পাটে। বাকিটা প্রয়োজন হয় আসবাবপত্র শিল্পে। চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ  কাঠ আমদানি করতে হয়। মায়ানমার, সুরিনাম, ক্যামেরুন, লাইবেরিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি হয় নানাজাতের কাঠ। আজবী, বাছালো, নিম্বালি, আফোমি, বুলেট, গামারি ইত্যাদি আমদানি হয়।