Home First Lead এবার রেফার কন্টেইনার নিয়ে মহাসংকট

এবার রেফার কন্টেইনার নিয়ে মহাসংকট

  • ১৭ মে থেকে ৪ গুণ হারে দণ্ডভাড়া

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: পচনশীল পণ্যভর্তি হিমায়িত (রেফ্রিজারেটেড) কন্টেইনার নিয়ে মহাসংকটে চট্টগ্রাম বন্দর। পরিস্থিতি সামাল দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্বাভাবিকের ওপর ৪ গুণ হারে দণ্ডভাড়া আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

আমদানিপণ্য বোঝাই কন্টেইনার ডেলিভারি দ্রুততর না হওয়ায় বন্দরে বিরাজমান সংকটকে আরও প্রকট করেছে রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনার। কমলা, আপেল, আঙুর, মাছ, রসুন-পিয়াজ, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন পচনশীল পণ্যে ভর্তি কন্টেইনারগুলো। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগে রাখতে হয়। ২৬০০ প্ল্যাগ পয়েন্ট আছে বন্দরে এগুলোর জন্য। ৩ দফায় বন্দরের শতভাগ স্টোররেন্ট মওকুফ সুবিধা সত্ত্বেও ডেলিভারি নিচ্ছেন না আমদানিকারকরা। তারা বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সর্বোচ্চ মুনাফার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। আমদানিকারকদের এই মনোভাব সমস্যায় ফেলেছে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমকে।

পণ্য খালাস না হওয়া  পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যায় না তা থেকে। কন্টেইনার জাহাজ থেকে নামানো হতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার তারিখ পর্যন্ত ব্যবহৃত বিদ্যুতের সমূদয় বিল পরিশোধ করতে হয় শিপিং এজেন্টদের। আর সেটা তাদেরকে বিশাল ক্ষতিতে ফেলে বলে জানালেন এক শিপিং কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহি।

জাহাজের ডেকের ওপর থাকে রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনারের প্ল্যাগ পয়েন্ট। সেখানে থাকে কন্টেইনারগুলো। তাই জাহাজ থেকে এগুলো খালাস করে তারপর খোলা যায় হ্যাচ কভার। নতুবা তা খোলা যায় না এবং অন্য সব কন্টেইনার আটকে থাকে। সাধারণত প্রত্যেক জাহাজে ৮০ থেকে ১০০, এমন কি কোন কোন জাহাজে দেড় শ’ পর্যন্ত থাকে রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনার। অবশ্য, হাল আমলের কিছু জাহাজে ডেকের নিচে রয়েছে প্ল্যাগ পয়েন্ট।

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পচনশীল পণ্য, ফলমূল ডেলিভারি নেয়া হচ্ছে একেবারে কম। তাদের ধারণক্ষমতা পরিপূর্ণ। আর তা সুষ্ঠু অপারেশনাল কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। জাহাজ থেকে সাধারণ কন্টেইনার খালাস করতে রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনার নামাতে হয়। চলমান পরিস্থিতিতে তাতে সমস্যা হচ্ছে। তার প্রভাব পড়ছে সমগ্র অপারেশনাল কার্যক্রমে। জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্বাভাবিক ভাড়ার ওপর ৪ গুণ হারে দণ্ডভাড়া আরোপ করা হবে ১৭ মে থেকে। অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আশা করছে যে আমদানিকারকরা তার আগেই পণ্য ডেলিভারি নিয়ে যাবেন। তাতে বাজারেও বিভিন্ন ফ্রুটস এবং কিসমিস, আদা, রসুন ইত্যাদির সরবরাহ বাড়বে।

শিপিং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চিন থেকে যেসব জাহাজ সরাসরি আসে সেগুলোতে  রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনার থাকে প্রচুর। বর্তমান সংকটে এই সংখ্যা সীমিত করে দিতে পারে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেটা হলে পরিস্থিতি স্বল্প সময়ের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে ধারণা তাদের।  আমদানিকারকদের পচনশীল পণ্য ডেলিভারি না নেয়ায় শুধু বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে সমস্যা তৈরি করছে তা নয়,  বিপাকে ফেলে শিপিং কোম্পানিকেও। জানা গেছে, দু’টি এমএলও চট্টগ্রাম বন্দরমুখী রেফ্রিজারেটেড কন্টেইনারে  সারচার্জ আরোপ করেছে । ওসেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস ( ওএনই ) প্রাইভেট লিমিটেড  এবং সিএমএ সিজিএম তা কার্যকর করেছে।