আকতার হোসেন, বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: কনের বাবার বাড়ি সন্দ্বীপে, বরের বাবা ভারতের হায়দ্রাবাদের। বিয়ে হবে আমেরিকায়। আর খাওয়া-দাওয়া চট্টগ্রামে।
বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার রাত ২টায় বিয়ে। তখন সেখানকার সময় শুক্রবার বিকেল ৪টা। বাদ জুমা আকদ হবে।
মেয়ের মামা ব্যবসায়ী আরিফ উদ্দিন চৌধুরী বিজনেসটুডে২৪ কে জানান, ভাগ্নির বিয়ে উপলক্ষে চট্টগ্রামে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু সবাইকে নিয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য অনুসারে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু মহামারী করোনা সব এলোমেলো করে দিয়েছে।
জানান, সেই বাজেটটা দিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগী এবং তাদের চিকিৎসা ও সেবায় নিয়োজিতদের একদিনের যাবতীয় খাবার সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত। চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল কার্যনির্বাহি কমিটির কাছে এই অভিপ্রায়ের কথা জানালে তারা সম্মত হয়েছেন। করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগী, চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মি মিলিয়ে মোট প্রায় ৫০০ জনকে দুপুরে এবং ৩০০ জনকে রাতে খাবার সরবরাহ করা হবে শনিবার। নগরীর একটি ক্লাবে রান্না করে দু’বেলা প্যাকেট খাবার নিয়ে যাওয়া হবে সেখানে।
আরও জানান, কেবল মা-শিশু হাসপাতালে নয়, ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া পরিচালিত ফিল্ড হাসপাতালেও রোগীদের একদিনের খাবারের জন্য টাকা দিয়েছেন। ভাগ্নির বিয়ে উপলক্ষে খাওয়ানোর জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ লাখ টাকা নির্দিষ্ট ছিল। সবটা তিনি করোনা রোগী ও তাদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের একদিনের খাবার সরবরাহ বাবত ব্যয় করছেন। তা করে তিনি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
আরিফ চৌধুরী ইতিপূর্বে মা, বাবার নামে ডায়বেটিক হাসপাতালে দু’টি বেড দিয়েছেন। তার স্ত্রী রুমানা হায়াত একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা ম্যানেজার। তিনিও জড়িত সমাজসেবামূলক কাজের সাথে।
আরিফ চৌধুরী জানান, বোন ইশরাত জাহানের সাথে বিয়ে হয় সন্দ্বীপের আবদুল কাদের চৌধুরীর সাথে। বিয়ের পর তারা চলে যান আমেরিকা। ব্যবসা করেন। সেখানে জন্ম ফাইজা চৌধুরীর। মাস্টার্স করার পর এখন অস্টেওপ্যাথিক মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
অপরদিকে, বর মোহাম্মদ রাহিল মহিউদ্দিনের বাবা ও মা ভারতের হায়দ্রাবাদের। স্থায়ী অধিবাসী আমেরিকার।
রাহিল ও ফাইজা চৌধুরীর প্রাক-জানাজানিতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হচ্ছে বলে জানান আরিফ চৌধুরী।
এদিকে, মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের কার্যনির্বাহি কমিটির ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানান আরিফ চৌধুরীকে। সেই সঙ্গে বলেন যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য বজায় রাখতে গিয়ে বিয়ে-শাদী এবং আরও বিভিন্ন উপলক্ষে বিপুল খরচ না করে এ ধরনের সেবামূলক কাজে ব্যয় করতে পারেন অন্যরাও।