বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির পর ইরান তাদের রেলপ্রকল্প থেকে বাদ দিলো ভারতকে। তবে, দিল্লি বলছে যে তারা সেখান থেকে সরছে না।
ভারতের সাথে ইরানের রেলপ্রকল্পের চুক্তিটি হয়েছিল ৪ বছর আগে। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইরান সফরের পরেই এই ঐতিহাসিক চুক্তি হয়। প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত আফগানিস্তানও। মূলত আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে একটি বিকল্প বাণিজ্য পথ গড়ে তুলতে প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত হয় ভারত। ভারতের সরকারি রেলওয়ে কোম্পানি ইরকান এই কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছিল ৷
পাকিস্তানের গ্বদর বন্দর থেকে ৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত চাবাহার ভারতের জন্য বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইরান এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার ফলে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ায় নিজস্ব পণ্য রফতানির জন্যই প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্পে শামিল হয়েছিল ভারত।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্যা হিন্দু জানায়, গত সপ্তাহে একাই প্রকল্পটির উদ্বোধন করে ইরান। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাবাহার সমুদ্রবন্দর থেকে আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী ইরানি শহর জাহেদান পর্যন্ত ৬২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন বসানো হবে। গত সপ্তাহে প্রকল্পটির একাংশে লাইন পাতার কাজ উদ্বোধন করেন ইরানের পরিবহণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মোহাম্মদ এসলামি। তিনি জানান, ওই রেলপথটি আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আফগানিস্তান সীমান্তের আরও একটি শহর জারাঞ্জে।
ইরানের অভিযোগ, সমঝোতা হওয়ার ৪ বছর পার হয়ে গেলেও ভারত প্রকল্পটিতে ফান্ড সরবরাহ করেনি। ভারতের ওপর আস্থা রাখা হলেও তারা সাহায্য করেনি ৷ইরানের এক কর্মকর্তা পরে গণমাধ্যমকে জানান, ভারতের কোনও সহায়তা ছাড়া তেহরানের রেল কর্তৃপক্ষ একাই ওই প্রকল্পটি করবে। কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মধ্যে।
প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ৪০ কোটি ডলার দেবে ইরানের জাতীয় উন্নয়ন তহবিল।
সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদের ৪০ হাজার কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে চাবাহার রেল প্রকল্পে বেইজিংকে যুক্ত করেছে তেহরান।
বৃহস্পতিবার আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চাবাহার প্রকল্প থেকে দিল্লি সরছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়: ভারতকে ছাড়াই চাবাহার রেল প্রকল্পের কাজ ইরান শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নড়েচড়ে বসল সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, ওই রেল প্রকল্প মূল চাবাহার প্রকল্পের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। ভারতের তার থেকে পিছিয়ে আসার প্রশ্নই নেই। ওই প্রকল্প রূপায়ণে টাকা ঢালতে প্রস্তুত নয়াদিল্লি। এখন না হলেও প্রকল্পের পরবর্তী পর্যায়ে ভারত অংশ নেবে।