মা-বাবা বাংলাদেশে এনে ‘জোর করে’ বিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর তারা মেয়ের পাসপোর্ট নিয়ে ফিরে যান আয়ারল্যান্ডে। কয়েক মাস পর মেয়েটি আয়ারল্যান্ডে থাকা প্রেমিকের বুদ্ধিতে ব্রিটিশ এবং আইরিশ সরকারের সহযোগিতায় সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে।
২১ বছর বয়সী ওই তরুণীর এই খবর দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের প্রভাবশালী অনলাইন পত্রিকা হেরাল্ড। সেখানে তার ছদ্মনাম হিসেবে ‘আমালা’ ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।
আমালা হেরাল্ডকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানান, তারা মা-বাবা গত বছর তাকে নিয়ে অসুস্থ দাদীকে দেখার কথা বলে বাংলাদেশে আসেন। এরপর এখানে এনে তাকে বিয়ে দেয়া হয়।
আমালাকে বাংলাদেশ থেকে রীতিমতো সিনেমা স্টাইলে উদ্ধার করা হয়। বুলেটফ্রুপ গাড়িতে নেয়ার সময় সাইবার গোয়েন্দারা বিভিন্ন স্থান থেকে নজর রাখেন।
আমালার দাবি, বাংলাদেশে আসার পর তার মা-বাবা ফোন এবং পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। এরপর বিয়েতে বাধ্য করেন।
ঠিকমতো বাংলা বলতে না পারা আমালা দুই মাস স্বামীর সংসার করেন। তার অভিযোগ, এই দিনগুলোতে তাকে মানসিক এবং যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।
‘যতদিন পেরেছি আমাকে ধর্ষণ করতে দেইনি,’ জানিয়ে আমালা বলেন, ‘ভয়ংকর দিন কেটেছে আমার। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত আমি চোখের জলে ভেসেছি।’
‘ভেবেছিলাম সারা জীবন এখানেই থাকতে হবে। ওই সময় আত্মহত্যার কথাও ভেবেছি।’
শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পরিণতিতে না গিয়ে আমালা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই যুবক আয়ারল্যান্ডে বসে ব্রিটেনের ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, কারণ আয়ারল্যান্ডে এ ধরনের ইউনিট নেই।
ব্রিটিশ সরকার তখন আইরিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমালার বিষয়টি জানায়।
এরপর কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আমালার শ্বশুর বাড়ির বিল্ডিংয়ের পেছন থেকে তাকে উদ্ধার করেন। এখন তিনি ডাবলিনে আছেন।
কেন এমন হয়েছে: প্রতিবেদনের কোথাও আমালাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে পরিচয় করানো হয়নি। কিন্তু আমালার দাদীর কথা যেহেতু বলা আছে তার মানে তার মা-বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হয়ে থাকতে পারেন।
আমালার কথায়ও এমন ইঙ্গিত আছে, ‘সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ধর্মের কারণে এমনটি করা হয়। ধর্ম এখানে বড় ভূমিকা রাখে।’
-দেশ রূপান্তর