বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: খোরশেদ আলম সুজনের অর্ধ শতাব্দীকালের রাজনৈতিক জীবন। অনেকবার স্বপ্ন দেখেছেন ‘নৌকার মাঝি’ হওয়ার। কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে। অবশেষে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের। নিয়োগ পেয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে।
রাজনীতি শুরু করেন ৫০বছর আগে কাট্টলি স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে। সরকারি মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেন। পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সংকট, জলাবদ্ধতাসহ নগরবাসীর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেছেন তিনি।
স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কপালে জোটেনি। ১৯৮২ সালের ২৩ মার্চ সিদ্ধান্ত হয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ( চাকসু ) নির্বাচনে ভিপি পদে তিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পরদিন জারি হয় সামরিক আইন। ভেস্তে যায় চাকসু নির্বাচন। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রথমদিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। পরে তা বাতিল হয়। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত সিলেকশনে নাম ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাদ পড়ে যান। দলীয় মনোয়ন চেয়েছিলেন সিটি মেয়র পদে। মনোনয়ন দেয়া হয়েছে রেজাউল করিমকে।
শতবর্ষ পরেও যেন মানুষ মনে রাখে
বিজনেসটুডে২৪ এর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, ‘আর কতদিন বেচে থাকবো জানিনা, যতদিন বেচে থাকবো, মানুষের জন্য, জাতির জন্য নিবেদিত থাকবো। দেশের আর মানুষের জন্য প্রতিটি মুহূর্ত আমি ব্যয় করতে চাই। যাতে অন্য রাজনীতিবিদরা অনুপ্রাণিত হয়ে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে এগিয়ে আসেন। লেখক মৃত্যুর পর তার লেখার মাঝে বেচে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত আমারও আকাঙ্খা ‘শতবর্ষ পরেও যেন মানুষ আমাকে মনে রাখে’, স্মরণ করে।
আলাপচারিতায় তিনি পরবর্তী মেয়রের কাছে বেশ কিছু প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন। সেগুলো হলো:
পরবর্তী মেয়র নগরীকে সুন্দর রাখার ব্যাপারে সক্রিয় থাকবেন, সিটি কর্পোরেশনের সাথে সম্পৃক্ত সেবা সংস্থাগুলোর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলবেন, সরকারের সঙ্গে ও নগরীর উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সাথে সুসম্পর্ক রাখবেন এবং স্থানীয় সরকারকে সহায়তাকারি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করবেন আগামীর নগরপিতা।
চট্টগ্রাম শহরের সাগরও পাহাড়ের যে মেলবন্ধন, সৌন্দর্য তার সাথে ভারসাম্য রেখে আকর্ষণীয় করে এই শহরকে ব্যবসা,বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপযোগী করে গড়ে তোলবেন আগামী মেয়র।
খোরশেদ আলম সুজন আগামী মেয়রের কাছে যেসব প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন, এখন সুযোগ পেয়েছেন নিজেই সেগুলো বাস্তবায়নের। নগরবাসী এখন আশা করেন যে প্রশাসকের দায়িত্ব পালনকালে তিনি সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন। শতবর্ষ পরেও মানুষ তাকে মনে রাখতে চায়।