কক্সবাজারের মহেশখালীতে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে লবণ ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তারকে খুনের ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এতে ওই থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ওসি প্রদীপ ছাড়াও মামলায় পুলিশের আরও পাঁচ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন– এসআই হারুনুর রশীদ, এসআই ইমাম হোসেন, এএসআই মনিরুল ইসলাম, এএসআই শাহেদুল ইসলাম ও এএসআই আজিম উদ্দিন।
প্রধান আসামি করা হয়েছে ফেরদৌস বাহিনীর প্রধান ফেরদৌস (৫৬)। তিনি একই এলাকার মৃত নুরুল কবিরের ছেলে।
নিহত আবদুস সাত্তার হোয়ানক পূর্ব মাঝেরপাড়ার মৃত নুরুচ্ছফার ছেলে।
হামিদা আক্তার জানান, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টার দিকে ফেরদৌস বাহিনীর সহায়তায় হোয়ানকের লম্বাশিয়া এলাকায় তার স্বামী আবদুস সাত্তারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি।
‘অবশেষে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি। রিট পিটিশন নং-৭৭৯৩/১৭ মূলে ‘ট্রিট ফর অ্যাফায়ার’ হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন বিচারক।’
রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার পর মহেশখালী থানায় মামলা করতে গেলে তা নেয়া হয়নি।
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী এজাহার (লিখিত অভিযোগ) দাখিল করলে তা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রহণ করতে তখন ওসিকে (প্রদীপ কুমার দাশ) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ওই আদেশ বাতিল করে নতুন করে রিট শুনানি করতে বলেন। এর পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ওই রিটের কার্যক্রম আর এগোয়নি।
প্রদীপ কুমার দাশ ২০১৮ সালের অক্টোবরে মহেশখালী থেকে টেকনাফ থানায় বদলি হন। মহেশখালীর মতো টেকনাফেও তার বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই টেকনাফের শামলাপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান, যা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা হিসেবে প্রথমে প্রচার করা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ। সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর তাকে টেকনাফ থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তিনি এখন কারাগারে।