- খালি কন্টেইনার দ্রুত শিপমেন্ট চাই: বিকডা চেয়ারম্যান
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: অফডকগুলোতে খালি কন্টেইনার জমে যাচ্ছে। দ্রুত শিপমেন্ট না হলে নতুন বিপত্তি তৈরি হবে। এ আশংকা বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো এসোসিয়েশন ( বিকডা ) চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ূম খান-এর।
১৭ অফডকের মধ্যে কয়েকটির ইতিমধ্যে কানায় কানায় ভর্তি। ২০০০ টিইউস সক্ষমতার কে এন্ড টিতে রয়েছে সক্ষমতার অতিরিক্ত ৫৬ টিইউস। একই ক্ষমতার কিউএনএস ডিপোতে অবশিষ্ট আছে অল্পকিছু জায়গা। কেডিএস ডিপোতে ১৭৪ টিইউস রাখার মত স্থান রয়েছে। এই ডিপোর সক্ষমতা ৭হাজার টিইউসের।
নুরুল কাইয়ূম খান জানান, ২৪ এপ্রিলের পর থেকে প্রায় ২০ হাজার টিইউস কন্টেইনার বন্দর থেকে অফডকগুলো নিয়েছে। ১৭ ডিপোর ধারণক্ষমতা ৭৭ হাজার টিইউসের। রয়েছে প্রায় ৬৩ হাজার। আর ১৪ হাজারের মত নেয়া সম্ভব। কিন্তু সমস্যা তৈরি করেছে খালি কন্টেইনার। বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের ফিরতি যাত্রায় সেখানকার কন্টেইনার তুলে দিলেও অফডক থেকে শিপমেন্ট করা হচ্ছে না। তাতে স্তূপ জমে যাচ্ছে। আমদানি পণ্য ডেলিভারি নেয়ার পর কন্টেইনার খালি হয়। সেগুলো দ্রুত শিপমেন্ট না হওয়ায় জায়গা জুড়ে আছে। শিপমেন্ট হলে জায়গা খালি হতো।
জানালেন, আমদানি পণ্য ডেলিভারি নেয়া হচ্ছে কম। অন্যদিকে শুরু হয়েছে রপ্তানি পণ্য আসা। এই রপ্তানি কিছুদিন আগে একেবারে শূণ্যে নেমে এসেছিল। পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর তৎপরতা পর্যবেক্ষণে ধারণা হয়েছিল যে শিগগির রপ্তানি পণ্য আসছে না। পরিস্থিতি পরিবর্তণ হয়ে গেছে। একসপ্তাহ ধরে রপ্তানি পণ্য আসা শুরু হয়েছে। ডিপোসমূহ তা কন্টেইনারে ভরে রাখছে। সেগুলোও শিপমেন্টের অপেক্ষায়। আগে আসার সাথে সাথে জাহাজে চলে যেতো। এখন পড়ে রয়েছে। কোন জাহাজে যাবে সেটা নির্ধারণের পর শিপমেন্ট হবে। এসব প্রেক্ষাপটে বিকডা চেয়ারম্যান অভিমত দেন যে খালি কন্টেইনার শিপমেন্ট এবং ডিপোতে থাকা ইম্পোর্ট কার্গো ডেলিভারি অধিকতর গতিশীল হওয়া প্রয়োজন। নতুবা, পর্যায়ক্রমে সব ডিপোতে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে আশংকা করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক ( পরিবহন ) এনামুল করিম অফডকের খালি কন্টেইনার শিপমেন্ট না হওয়া প্রসঙ্গে জানান, পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক রয়েছে অফডকগুলোর। সেখান থেকেও খালি কন্টেইনার শিপমেন্ট হচ্ছে, তা আরও জোরদার করা হবে। যেসব ডিপোর আমদানি রপ্তানি দু’টিই সমান, সেগুলো বন্দর থেকে খালি কন্টেইনার নিয়ে যাচ্ছে রপ্তানি পণ্যের জন্য। তবে, যেগুলোর রপ্তানি কার্যক্রম নেই বা কম সেসব ডিপোতে হয়তো জমে যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি ।
এক্সপোর্ট কার্গো গ্রহণ এবং নির্ধারিত কিছু আমদানি পণ্য নিয়ে ডেলিভারির সুযোগ ছিল অফডকগুলোর। কন্টেইনার জটে বন্দরের ভয়াবহ অচলাবস্থায় তা সামাল দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব রকমের আমদানি পণ্য অফডক থেকে অনুমোদন দিয়েছে সাময়িকভাবে। এরপর সব পণ্যের কন্টেইনার যাচ্ছে অফডকে। পণ্য ডেলিভারির পর খালি হওয়া কন্টেইনারে ভর্তি করা হয় রপ্তানি পণ্য। করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে রপ্তানি কমে যাওয়ায় কন্টেইনার খালি পড়ে থাকছে অধিক সংখ্যায়। বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং নির্বিঘ্ন রাখার জন্য অগ্রাধিকার দিচ্ছে ইয়ার্ডের খালিগুলোর শিপমেন্ট। তাতে বিভিন্ন অফডকে স্তূপ জমছে এবং বিশাল স্থান জুড়ে রয়েছে খালি কন্টেইনার। বন্দর থেকে এসব অফডকের ইম্পোর্ট কন্টেইনার নেয়ার হার কমে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার রাখার সক্ষমতা ৪৯০১৮ টিইউস। রয়েছে ৪৪৬০৬ টিইউস। এগুলোর মধ্যে খালি কন্টেইনার ১৮১৪ টিইউস এবং ৮০৫৩ টিইউস নিলামযোগ্য।