Home First Lead আজ থেকে মিলগেটে তেল সরবরাহ মনিটরিং

আজ থেকে মিলগেটে তেল সরবরাহ মনিটরিং

১৫ দিনে  এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ হঠাৎ কমে গেছে। এই সুযোগে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে ১৫ দিনে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ভোক্তাদের কাছে থেকে। এই তথ্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের যৌথ টিম বৃহস্পতিবার থেকে রিফাইনারিগুলোতে গিয়ে সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। সেই সঙ্গে ৩ মাসের তেল সরবরাহের যে তথ্য রিফাইনারি মালিকরা দিয়েছেন তাও যাচাই করে দেখা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে বুধবার ভোজ্য তেল মিল মালিক ও ডিলারদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।  প্রায় ১০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিদিন যদি ৫ হাজার টন ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে আর লিটারপ্রতি ১০ টাকা করে অতিরিক্ত আদায় করলে মোট অংকটা অনেক বড়। এভাবে তা অনুমান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কিছু ডিলার এবং অসাধু ব্যবসায়ী এই সংকট তৈরি করেছে বলে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রাথমিক ধারণা। কয়েকটা পর্যায় থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। আমরা আগে মিলগুলোর সরবরাহের তথ্য যাচাই করে তারপর সুনির্দিষ্ট ডিলারদের চিহ্নিত করবো। এরপর সরবরাহের তেল কোথায় গেছে-তাও বের করবো।

বড় বড় শিল্পগোষ্ঠির ছয়টি রিফাইনারি সয়াবিন তেল এবং পামওয়েলসহ ভোজ্য তেল শোধন করে দেশের বাজারে সরবরাহ করে থাকে। এই মিলগুলো বড় বড় শিল্প গ্রুপের প্রতিষ্ঠান।

মিলগুলো থেকে সরবরাহে সংকট তৈরি করা হয়েছে নাকি ডিলারদের কারসাজি – এমন প্রশ্নেও নানা আলোচনা চলছে।

তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, তাদের বৈঠকে মিল মালিকরা গত তিন মাসের সরবরাহের তথ্য বা তালিকা দিয়েছেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোজ্যতেল বিপণণকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আরো ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করে। তাদের প্রস্তাবে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৮০ টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। আর পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮৭০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে খোলা সয়াবিন ও পামঅয়েলের দামও বাড়ানোর কথা বলা হয়।

নতুন এই দর ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়। কিন্তু গত ২ মার্চ সচিবালয়ে নিত্যপণ্যের মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিপণনকারী কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের দাম আরও ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, সামনে রমজান মাস। তাই এখন সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো যাবে না।’  দাম না বাড়ানোর এ নির্দেশের পর ওইদিন বিকালেই সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম অটোমেটিকভাবে আরেক দফা বেড়ে যায়। এর আগে সর্বশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবেই সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছিল।