বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি:
করোনা মহামারির কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে তেলের বাজার। সেই প্রভাবে বাংলাদেশের বাজারেও হু হু করে বেড়েই চলেছে এ নিত্য পণ্যের দাম। টনপ্রতি ৭০০ ডলারের সয়াবিন তেল এখন প্রায় ১২০০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, গত চার মাসে বাংলাদেশের বাজরে গড়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। যেখানে অক্টোবর মাসে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৩৫-১৪০ টাকা। অর্থাৎ গত চার মাসে প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল ১১৫-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মিলগেট পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১২৫ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১১০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিবছর ১৭ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা। চাহিদা পূরনে প্রায় ৯৪ ভাগ তেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬ লাখ অশোধিত শোয়াবিন এবং পাম্প তেল আমদানি করা হয়। চলতি অর্থবছরে প্রথম ৬ মাসে ৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকার ৮ লাখ ২৩ হাজার টন অশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়। যেখানে বিগত অর্থবছরে ১০ লাখ ৬৩ কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছিলো।
সরকার আমদানি পর্যায়ে ভোজ্যতেলে ৩ স্তরের ভ্যাট আরোপ করায় খরচও বেশি পড়ছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা সব ধরণের সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে।
পাম তেলের বড় রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে সরবরাহ কমেছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া বিপুল রপ্তানি শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানিতে শুল্ক প্রতি টন ৫৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে মান ভেদে ২৫৫ ডলার পর্যন্ত করেছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভোজ্য তেলের ওপর তিন পর্যায়ে ভ্যাট আরোপ করা হয়, যা আগে শুধু আমদানি পর্যায়ে আদায় করা হতো। এ ছাড়া অগ্রিম করও দিতে হচ্ছে আমদানি পর্যায়ে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বাড়ে, আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে অভ্যন্তরীণ বাজারেও কমে।
২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়া শুরু হয়। এর পর থেকেই আমদানিকারকরা এক স্তরের ভ্যাট নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।