বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আফগানিস্তানের মানুষ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করতে পারছেন না। আমানত করা অর্থের পরিমাণও কমে গিয়েছে। নগদ অর্থের যোগানও কমে গিয়েছে বিপজ্জনক মাত্রায়। আর কয়েক মাসের মধ্যে ভেঙে পড়তে পারে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা। সোমবার এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ।তিন পাতার এক নোটে বলা হয়েছে, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে সমাজেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত অগাস্টের মাঝামাঝি তালিবান আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে। তারপরেই সেখানে বিদেশের অর্থে চলা প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। তখন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ওপরে বিরাট চাপ পড়ে। ব্যাঙ্কগুলি অর্থ তোলার সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়। ইউনাইটেড নেশনস ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (ইউএনডিপি)-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের ফিনান্সিয়াল ও ব্যাঙ্ক পেমেন্ট ব্যবস্থার হাল খুবই খারাপ। ব্যাঙ্কগুলি যাতে পুরোপুরি অচল না হয়ে পড়ে সেজন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইউএনডিপির আফগানিস্তান শাখার প্রধান আবদুল্লা অল দরবারি বলেন, “আমরা আফগানিস্তানের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকে সহায়তা করতে চাই। তার জন্য আমাদের একটা পথ খুঁজে বার করতে হবে। আমরা কিন্তু তালিবানকে সমর্থন করছি না।”
তালিবান ক্ষমতায় আসার পরে ক্রমশ ভেঙে পড়ছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি। গত অক্টোবরের মাঝামাঝি জানা যায়, রাজধানী কাবুল-সহ আফগানিস্তানের একাংশ ডুবে আছে অন্ধকারে। বিদ্যুৎ সরবরাহ সেখানে বন্ধ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তালিবান সরকার বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটাতে পারেনি, তাই বন্ধ করা হয়েছে বিদ্যুৎ। আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উজবেকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি প্রদেশ এবং কাবুলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে।
বিদ্যুতের যে বকেয়া বিল জমা হয়েছে তালিবান সরকারের কাছে, তার পরিমাণ প্রায় ৬২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এই বিল মেটাতে পারছে না তালিবান। সদ্য দেশের ক্ষমতা দখল করেছে তারা। এর মধ্যে এত বিল মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এমনিতেই সে দেশের রাজনৈতিক ভাঁড়ার শূন্য। তাই ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সরকারের তরফে অবশ্য এই বকেয়ার কথা স্বীকার করা হয়নি। বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ প্রযুক্তিগত ত্রুটি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ত্রুটি ঠিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে তালিবান সরকার। যদিও আফগানিস্তানের একাধিক মিডিয়া রিপোর্ট সরকারের বকেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আরও বড় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।