বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি:
ঢাকা: আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় ইয়াস থেকে বাংলাদেশ অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত। আম্পানের মতো ইয়াস যে শক্তিশালী হচ্ছেনা তা অনেকটা নিশ্চিত।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতিবিষয়ক জরুরি সভায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, বর্তমান অবস্থায় ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেওয়া হয়েছে। এখন আর সতর্কসংকেত বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। তবে ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে বিপৎসংকেত পাওয়ামাত্র আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যাওয়া যায়।
সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ পরিণত হয়ে একই এলাকায় (১৬.৬ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। সেটা বুধবার (২৬ মে) দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে আঘাত হানা শুরু করতে পারে। ভারতের ওড়িষা, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করতে পারে।
বাংলাদেশের সুন্দরবন ও খুলনাও অঞ্চলে পড়বে ইয়াসের প্রভাব। ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার (২৪ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কি. মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ইয়াস আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে
এদিকে, ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানায়ঃ গভীর নিম্নচাপ সোমবার সকালেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। উপগ্রহ চিত্র দেখে সকাল ৯ টার সময়ে তা সরকারি ভাবে জানায়।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ওই গভীর নিম্নচাপ রবিবার বিকেলের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের দিকে আরও এগিয়েছে। দিঘা থেকে তা এখন ৬০০ কিলোমিটারের সামান্য বেশি দূরে। ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল থেকে গভীর নিম্নচাপের দূরত্ব এখন প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সোমবার হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে বিকেলের পর থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার। এই ঝড়ের গতিই মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে বেড়ে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার হতে পারে। তার পর তা ক্রমশই বাড়তে থাকবে।