পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং সেক্টরের বড় ইনভলভমেন্ট থাকার কারণেই ২০১০ সালের ধস হয়েছে হঠাৎ করে। এটা কিন্তু আমাদের এসইসির কারও দোষে হয়নি। হঠাৎ করে একটি সিদ্ধান্ত আমাদের মার্কেটে প্যানিক করে ধ্বংস করে দেয়।
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: ইতালি থেকে গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। গণমাধ্যমকে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, সোস্যাল মিডিয়াতে গুজব ছড়িয়ে সম্প্রতি যিনি বাজারকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালান তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নারায়নগঞ্জে তার দেশের বাড়ি।
তিনি বলেন, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে গুজব ছড়ায়, তাদের জন্য আমাদের নতুন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য ডিজিটাল মাধমে দেখে নিয়মিত ব্যবস্থা নিচ্ছে। সম্প্রতি একজন গুজব ছড়াচ্ছিল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি ইতালিতে থাকেন। তার দেশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। তিনি ইতালি থেকে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে দেশের পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার বিস্তারিত তথ্য আমরা পেয়েছি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে নজরদারি করতে পারলেও ফিল্ডে আমরা তা পারি না। সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে কিছু করলে আমরা ধরতে পারি। আমাদের আইসিটি অ্যাক্ট আছে, যার মাধ্যমে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। এ কারণে এখন গুজব অনেক কমে গেছে। কিছুদিন আগেও সিলেট থেকে একজনকে আটক করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে উনি মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। আর এখন নতুন যাদের শনাক্ত করা হচ্ছে, তাদের প্রায় সবাই দেশের বাইরে থেকে গুজব ছড়াচ্ছেন। গুজব মনিটরিংয়ে আলাদা সেল করা হচ্ছে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমরা এই মুহূর্তে সেকেন্ডারি মার্কেটে কোনো প্রতিষ্ঠান, কোনো দেশ বা ব্যাংকিং সেক্টরের একচ্ছত্র অধিপত্য থাকুক সেটা চাই না। একটা সময়ে পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং সেক্টরের বড় ইনভলভমেন্ট থাকার কারণেই ২০১০ সালের ধস হয়েছে হঠাৎ করে। এটা কিন্তু আমাদের এসইসির কারও দোষে হয়নি। হঠাৎ করে একটি সিদ্ধান্ত আমাদের মার্কেটে প্যানিক করে ধ্বংস করে দেয়। সেকেন্ডারি বাজারে বিদেশিরা আসবেন যাবেন। আর যদি সেকেন্ডারি বাজারে বিদেশিদের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে যাই, তাহলে দেখা যাবে একদিনেই ওরা এত বড় আকারে বিক্রি করে দিয়ে চলে যাবে এবং তাতে ওই দিনই ধস নামবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, যেদিন আমরা দায়িত্বে এসেছি, সেদিন আমাদের লেনদেন ছিল শত কোটি টাকার আশপাশে। আমি ওইদিনই বলেছিলাম এটা ২/৩ হাজার কোটি টাকায় যাবে। সেটা কিন্তু হয়েছে। এরপর আমি বলেছি, লেনদেন পাঁচ হাজার কোটি টাকায় যাবে। আমি যখনই যেটা বলি সবাই দেখি কেন যেন একটু হালকাভাবে দেখেন। কিন্তু আমার বলার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ থাকে। সেকেন্ডোরি মার্কেট দিয়ে আমরা অলরেডি ২/৩ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেছি। ৫ হাজার কোটি টাকার কথা বলেছি, কারণ আমাদের ট্রেজারি বন্ড, ট্রেজারি বিল, পার্পিচুয়াল বন্ড এখন ট্রেড হবে। আমাদের ট্রেজারি বন্ডের সাইজই কিন্তু দুই লাখ টাকার ওপরে। এর বাইরে পার্পিচুয়াল বন্ড রয়েছে। ১১টি ব্যাংকের বন্ড লেনদেন শুরুর কাজ চলছে। এটিবি বোর্ড ও আমাদের আইটি যখন আরও শক্তিশালী হবে দৈনিক লেনদেন তখন ৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে চলে যাবে। আমরা কীভাবে পরিকল্পনা করছি, সবাই হয়তো তা জানে না। তবে আপনারা একটা একটা করে দেখবেন এবং সেভাবেই কাজ এগুচ্ছে।