বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
দু’দিন আগেই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের আটটি আসনের উপনির্বাচনের ছ’টিতে জয়লাভ করেছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইসলাম পার্টি বা পিটিআই । শুক্রবার দলের সর্বাধিনায়ক তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের একটি সিদ্ধান্তে। দুর্নীতির উদ্দেশে তথ্য গোপনের অভিযোগে পাক্তন পাক ক্রিকেটারকে কড়া সাজা শুনিয়েছে সে দেশের নির্বাচন কমিশন । তারা বলেছে, আগামী পাঁচ বছর ইমরান পাকিস্তানের কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। ফলে পাঁচ বছর সংসদে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল তাঁর।
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার খানিক পরেই কমিশনের অফিসের বাইরে গুলি চলে। মনে করা হচ্ছে ইমরান সমর্থকরা ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গুলি ছুড়ে থাকতে পারে। ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশি অতিথিদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার সামগ্রী নিলাম করে পাওয়া বিপুল অর্থ রোজগারের বিষয়টি তিনি আয়কর দফতর এবং কমিশনের কাছে গোপন করেছেন। উপহারের মধ্যে রয়েছে একটি গ্রাফ ঘড়ি, এক জোড়া কাফলিঙ্ক, একটি দামি কলম, একটি আংটি এবং চারটি রোলেক্স ঘড়ি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ভোটের লড়াইয়ে ইমরানের পাঁচ বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পিছনে রয়েছে লোপ্পা ক্যাচ তোলা কিংবা ব্যাটম্যানকে ছয় হাঁকানোর বল করার মতো ব্যাপার।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন শুক্রবার তোষাখানা মামলায় বিদেশি অতিথিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপহার বিক্রি বাবদ আয় গোপন করার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর সভাপতি পাঁচ বছরের জন্য সংসদ সদস্য হতে পারবেন না।
পাকিস্তানে বর্তমানে ক্ষমতাসীন একটি জোট সরকার। জোট শরিকদের সাংসদরা গত আগস্টে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে বলা হয়, উপহার বিক্রি থেকে আয় গোপন করায় ইমরানকে ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করা হোক।
পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ আজ সর্বসম্মতভাবে রায় দেয়।
পাক নির্বাচন কমিশন আরও ঘোষণা করেছে যে, তারা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করবে। ইতিমধ্যেই পিটিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উমর জানিয়েছেন তাঁরা প্রথম হাইকোর্টে যাবেন। প্রয়োজনে যাবেন সুপ্রিম কোর্টেও। আর এক পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী সমর্থকদের পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। ইমরান নিজে এখনও মুখ খোলেননি।
ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি সরকারি সফরে গিয়ে মূল্যবান উপহার পান। ইমরান সেগুলি কম দামে কিনে নিয়ে নিলাম করে মোটা অর্থ রোজগার করেন।