বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ইরানে ক্ষমতার হাত বদল। সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গণনা হওয়া ৯০ শতাংশ ভোটের ৬২ শতাংশ পেয়ে জয়ী ঘোষিত হলেন অতি রক্ষণশীল মৌলবী বলে পরিচিত এব্রাহিম রাইসি। ইরানের প্রধান বিচারপতিও তিনি।
রাজনৈতিক হেভিওয়েটদের অনেককেই শুক্রবারের নির্বাচনে লড়তে দেওয়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে দৌড়ে নামা তিন প্রার্থীও হার স্বীকার করে নেন। ফলে রাইসির জয় আগাম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত লোকজন অবশ্য কে, কত ভোট পেয়েছেন, এখনও প্রকাশ করেননি সরকারি ভাবে।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি পরপর চার বছর দুটি মেয়াদে থাকার পর সরে যাচ্ছেন। আগস্টে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ছেন।
রাইসি এক জটিল সময়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে চলেছেন বলে পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত। ইরান দুনিয়ার প্রধান শক্তিগুলির সঙ্গে স্বাক্ষরিত, ভেঙে যাওয়া পরমাণু চুক্তি বাঁচানোর চেষ্টা করছে। একগুচ্ছ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশে যে আর্থিক দুর্দশা ঘনিয়ে উঠেছে, তা থেকেও মুক্তি চাইছে। আমেরিকা ও অন্য বিশ্ব শক্তিগুলির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করেছিল ইরান। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময় আমেরিকা সেই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। চুক্তির ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার মধ্যেউ অবশ্য জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ওই চুক্তি পুনরুদ্ধারে কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
ইরানে চূড়ান্ত রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্র বলে পরিচিত ৮১ বছরের সর্বময় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেইয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাইসি।
শুক্রবার যদিও লাখ লাখ লোক ভোট দিয়েছেন, কিন্তু বহু ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহই দেখাননি। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ৪০ মহিলা সহ প্রায় ৬০০ জন প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একের পর এক প্রার্থীকে ছেঁটে দেয় মৌলবী ও আইনজীবীদের গার্ডিয়ান কাউন্সিল। শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিলেন মাত্র সাতজন। সকলেই পুরুষ। তবে সেখান থেকেও তিনজন ভোটের দুদিন আগে নাম তুলে নেন। তাঁদেরই অন্যতম জনমোহিনী পথে হাঁটা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ জানিয়ে দেন, তিনি ভোটই দেবেন না। আমি এই পাপের অংশীদারক হতে চাই না, এক ভিডিও বার্তায় বলেন তিনি। যদি রাইসি নিজে ভোট দিয়ে বলেন, আমি যে কোনও রাজনৈতিক মতের অধিকারী প্রত্যেককেই ভোট দিতে বলছি। আমাদের দেশবাসীর ক্ষোভ, অসন্তোষ, অভাব সবই বাস্তব, কিন্তু সেটা যদি ভোটে সামিল না হওয়ার কারণ হয়, তাহলে ভুল।
রাইসির জয় সুনিশ্চিত হওয়ার পর খামেনেই মন্তব্য করেন, এটা ইরান দেশের বিরাট জয় কেননা সে শত্রুবাহিনীর দস্যু মিডিয়ার প্রোপাগান্ডার মুখে ফের রুখে উঠে দাঁড়িয়েছে।