Home Third Lead উত্তর সীমান্তে গরু পাচার, বাড়ছে করোনার আতঙ্ক

উত্তর সীমান্তে গরু পাচার, বাড়ছে করোনার আতঙ্ক

ছবি সংগৃহীত


কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরন নিয়ে জেলাবাসীর আতঙ্ক দিনদিন বেড়েই চলেছে। ভারতীয় এই ধরন রোধে সরকারি ভাবে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন উদ্যোগ। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে গরু নিয়ে আসায় সক্রিয় পাচারকারীরা। জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতি রাতেই ভারতীয় গরু ঢুকছে এমন অভিযোগ সীমান্তবাসীর।
 ভারতীয় এই গরুগুলি পৌঁছে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরাও কুড়িগ্রাম আসছেন গরু কিনতে। যাত্রাপুর ইউনিয়নের আব্দুল হাকিম জানান, শনিবার ও মঙ্গলবার যাত্রাপুর হাটে শতশত ভারতীয় গরু কেনাবেচা হয়। 
এছাড়াও নারায়নপুরের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক জানান নদীপথে শত-শত গরু সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এতে গরু পাচারকারীদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকা গুলোতে করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 
তবে বিজিবির দাবী, করোনার বিস্তাররোধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। জেলাপ্রশাসন ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। এতকিছুর পরেও সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ থেমে নেই। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাচারকারীদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরণ কুড়িগ্রামের সীমান্ত এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও কেন গরু চোরাচালান বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়। 
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কুড়িগ্রামের সব সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি গরু আসা বন্ধ করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে মনে করেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। 


কুড়িগ্রাম বিজিবির অধিনায়ক লে: জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন ইতিমধ্যে সীমান্তে করোনা বিষয়ক প্রচারণা শুরু করা হয়েছে। সীমান্তবাসীদের জানানো হয়েছে কোনরকম অনুপ্রবেশ লক্ষ্য করলেই তারা যেন বিষয়টি দ্রুত আমাদের জানান। এছাড়া অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে। এতকিছুর পরেও আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু’চারটি গরু চোরাপথে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 
কুড়িগ্রাম জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, মরনব্যাধি করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ করার বিষয়ে সব রকম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে গাফলতি হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউএনও ও বিজিবির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সব পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
এদিকে চলতি মাসে গত ২দিনে ১২২জন আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৯৭ জন। এবং মারা গেছেন ২৯ জন। 
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গতকাল শনিবার  জেলায় ২১০টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৫জনের এবং রোববার ১২৬ টি নমুনা পরিক্ষায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই বলে মনে করছে স্বাস্থ্যবিভাগ। 
জেলার সদর উপজেলায় সংক্রমণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। গত ২ দিনে আক্রান্ত ১২২ জনের মধ্যে ৭২ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা।