করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রীতিমতো ধুঁকছে ভারত। তারইমধ্যে একধাক্কায় পড়ে গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা। দুটি সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এল।
‘মর্নিং কনসাল্ট’ নামে একটি মার্কিন তথ্য-বিশ্লেষক সংস্থার জনপ্রিয়তার সমীক্ষা অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে মোদীর জনপ্রিয়তার সূচক ৬৩ শতাংশ নেমে গিয়েছে। যা ২০১৯ সালের অগস্টের পর থেকে সর্বনিম্ন। সেই সময় থেকেই মোদীরও জনপ্রিয়তা সূচকের উত্থান-পতনের তৈরি করছিল ওই মার্কিন সংস্থা। এপ্রিলে মোদীর জনপ্রিয়তায় সবথেকে বেশি ধাক্কা লেগেছে। সেই সময় ২২ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল তাঁর জনপ্রিয়তা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই সময় ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল। মার্কিন সংস্থার তরফেও জানানো হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের প্রস্তুতির অভাবের জেরে মোদীর জনসমর্থনে ক্ষয় ধরেছে।
শুধু মার্কিন সংস্থা নয়, ভারতীয় সংস্থা সিভোটারের সমীক্ষাও মোদীকে খুব একটা স্বস্তিতে রাখবে না। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী, গত বছর মোদীর কাজে ‘খুবই সন্তুষ্ট’ ছিলেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। এখন তা ৩৭ শতাংশে ঠেকেছে। ২০১৪ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা আসার পর থেকে প্রথমবার মোদীর কাজে সন্তুষ্ট মানুষের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে অখুশি মানুষের সংখ্যা। সিভোটার প্রতিষ্ঠাতা যশবন্ত দেশমুখ সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘নিজের রাজনৈতিক জীবনে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
গত বছর প্রাথমিকভাবে দাপটের পর ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছিল। সেই সময় ঢাকঢোল পিটিয়ে মোদীর প্রচার শুরু করেছিল কেন্দ্রের শাসক দল। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই নাকি করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। কিন্তু চলতি বছর শুরুর পর থেকেই আবারও দেশে বাড়তে থাকে করোনার দাপট। দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪০০,০০০ এবং ৪,০০০ ছাড়িয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যার নিরিখেও ভারতে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। আর তাতেই মোদীর জনপ্রিয়তা কমেছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
তবে সার্বিকভাবে জনপ্রিয়তায় ধাক্কা খেলেও এখনও দেশের সবথেকে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের তকমা আছে মোদীর কাছেই। সিভোটারের সমীক্ষা অনুযায়ী, মহামারীর কারণে দেশের মধ্যে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে, তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন বিরোধীরা।
-হিন্দুস্থান টাইমস