বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে ৪৭ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, গত ১২ মাসে দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ৬৩ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, দুর্নীতি রুখতে ভাল কাজ করছে সরকার। ওই সমীক্ষাতেই জানা গিয়েছে, এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেওয়া-নেওয়া হয় ভারতেই। এখানে ৩৯ শতাংশ কাজে ঘুষ দেওয়া হয়। ৪৬ শতাংশ ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য উঁচু মহলে যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন হয়। আর কোনও দেশে সরকারি পরিষেবা পেতে এভাবে উঁচুতলার লোকজন ধরতে হয় না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নামে এক সংস্থা এই সমীক্ষা করেছিল।
ভারতে যতজনের ওপরে সমীক্ষা করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৫০ জন জানিয়েছেন, কোনও না কোনও সময় তাঁদের থেকে ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। অন্তত ৩২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, সরকারি পরিষেবা পেতে তাঁরা উঁচুমহলের যোগাযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন।
ঘুষ দেওয়ার বিচারে ভারতের পরেই আছে কম্বোডিয়া। সেখানে ৩৭ শতাংশ কাজে ঘুষ দেওয়া হয়। এর পরে আছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে ঘুষ দেওয়া হয় ৩০ শতাংশ কাজে। ঘুষ দেওয়ার হারে সবচেয়ে নীচে আছে জাপান ও মালদ্বীপ। দু’টি দেশেই মাত্র দুই শতাংশ কাজে ঘুষ লেনদেন হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘুষ দেওয়া হয় ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে। নেপালে ঘুষ দেওয়া হয় ১২ শতাংশ কাজে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, যে দেশগুলিতে ঘুষের হার কম সেখানেও সরকারের তৎপর হওয়া উচিত। ঘুষ দেওয়া-নেওয়া একেবারেই বন্ধ হওয়া উচিত।
জাপানে মাত্র চার শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য তাঁদের উঁচু মহলে যোগাযোগ করতে হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়াতে ৩৬ শতাংশ ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা পেতে উঁচু মহলের যোগাযোগ লাগে। গত জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে একটি রিপোর্ট পেশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। তাতে দেখা যায়, দুর্নীতিগ্রস্ত ১৮০ টি দেশের তালিকায় ভারতের স্থান ৮০ নম্বরে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ১৭ টি দেশের ২০ হাজার মানুষের ওপরে সমীক্ষা করা হয়েছিল। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই সমীক্ষা হয়। গত ১২ মাসে দুর্নীতি নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল। মূলত ছ’টি ক্ষেত্রে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাওয়া হয়। সেগুলি হল, পুলিশ, আদালত, সরকারি হাসপাতাল, আইডেন্টিটি কার্ড সংগ্রহ ও অন্যান্য পরিষেবা। তাতে দেখা যায়, ভারতের নাগরিকরা বলছেন, ৪২ শতাংশ ক্ষেত্রে পুলিশকে তাঁদের ঘুষ দিতে হয়েছে। পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য ঘুষ দিতে হয়েছে ৪১ শতাংশ ক্ষেত্রে।