
- এসডিজি বাস্তবায়নে সবাইকে সমন্বিত উন্নয়নের আওতায় আনতে হবে: জুয়েনা আজিজ
- এসডিজির কাজের শুরু আছে, শেষ নেই: মনিরুল ইসলাম
- বিএটি সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়েও আমরা সচেতন: শাবাব আহমেদ
- লক্ষ্য অর্জনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে হবে: ফখরুল আহসান
- বেসরকারি খাতের মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে: আইনুল
- সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে: জুয়েল
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সরকারি এবং বেসরকারি খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
গতকাল রবিবার দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, দেশে বেসরকারি খাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কোম্পানি সামাজিক দায়বদ্ধতা কমর্সূচির (সিএসআর) আওতায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এটি এসডিজির উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করলেও অনেকেই বিচ্ছিন্নভাবে তা করছে।
ইত্তেফাক কার্যালয়ের মজিদা বেগম মিলনায়তনে গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজন করা হয়। দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি অ্যাফেয়ার্সের মুখ্য সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুগ্মসচিব (এসডিজি অ্যাফেয়ার্স) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
আলোচক ছিলেন বিএটি বাংলাদেশের হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স শেখ শাবাব আহমেদ, ইউনিলিভারের পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স) শামীমা আক্তার, সুহানা অ্যান্ড আনিস আহমেদ ফাউন্ডেশনের (এমজিএইচ গ্রুপ) সহকারী পরিচালক বাশিরা হারুন, ইউএনডিপির চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার (স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি ফর এসডিজিএস) ফখরুল আহসান, গ্লোবাল টেলিভিশনের সিইও এবং এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল আলম জুয়েল, দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে সবাইকে সমন্বিত উন্নয়নের আওতায় আনতে হবে। এসডিজিতে যেসব লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশ সেগুলোতে আগে থেকেই কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানবতার মুক্তির জন্য কাজ করে গিয়েছিলেন। প্রান্তিক এবং দরিদ্র মানুষের উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর চাওয়াগুলো এসডিজির মূল বিষয়গুলোর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক।
এসডিজি অ্যাফেয়ার্সের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধে বলেন, এসডিজির কাজের শুরু আছে, শেষ নেই। এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য অর্জন শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দেশের জন্য চ্যালেঞ্জের। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।
বিএটি বাংলাদেশের হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স শেখ শাবাব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা ১১২ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছি। ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়েও আমরা সচেতন। বিএটি বনায়ন, সুপেয় পানি সরবরাহসহ পরিবেশ রক্ষায় বেশকিছু কর্মসূচি পালন করে চলেছে। তার মতে, যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করে তাদের রিপোর্টিং নিশ্চিত করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ইউনিলিভারের পরিচালক শামীমা আক্তার বলেন, ইউনিলিভার পরিবেশ রক্ষায় নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে প্ল্যাটিক বর্জ্য অপসারণ। প্রাথমিকভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এই কাজ শুরু হলেও পরে চট্টগ্রাম হয়ে এই কর্মসূচির ব্যাপকতা বাড়ানো হবে।
ইউএনডিপির প্রতিনিধি ফখরুল আহসান বলেন, এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে অবশ্যই বেসরকারি খাতকে আস্থায় আনতে হবে। কারণ বেসরকারি খাত হচ্ছে উন্নয়নের চালিকা শক্তি। তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উপজেলা থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কার্যক্রমে সমন্বয় থাকতে হবে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম বলেন, অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। তবে বেসরকারি খাতের দায়িত্বশীলতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সবাইকে এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি সিএসআরের কাজ করছে। যারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করছে তারা আলোচনায় আসলেও ব্যক্তিগত কাজগুলো আড়ালে থেকে যায়। তিনি একটি সুনির্দিষ্ট প্লাটফরমের মাধ্যমে যাতে সিএসআরের কাজ করা যায় সেলক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা না পেলে এসডিজি কেন, কোনো লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত হবে না। এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ১৬ নম্বরে রয়েছে- ‘শান্তি, ন্যায় বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’। এই লক্ষ্যটি অর্জন করলে ১৭টি ধারাই অর্জন সহজ হবে।