বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
দৌলতপুর ( কুষ্টিয়া): দৌলতপুর থানার বেগুনবাড়ি গ্রাম থেকে এক যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে সজিব নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত সজিবের বাড়ি মিরপুর উপজেলার আমলা গ্রামে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ।
গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় অপহরণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সজিব ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ বিচারিক হাকিমের কাছে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলার এজাহারভুক্ত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, ‘সজিব এক সময় ছাত্রলীগ করতেন, গত কমিটিতে প্রচার সম্পাদকও ছিলেন। তবে বর্তমানে আমাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই, যোগাযোগও নেই। কোনো আইন বিরোধী কাজ করলেও তার জন্য সংগঠন দায়ী থাকবে না।’
এজাহার সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলার বেগুনবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবু আফ্ফান ও মামুনের বাড়িতে আত্মীয়তার সূত্রে বেড়াতে আসা কক্সবাজার জেলার মো. জোহার হোসেন (৩৩) নামে এক যুবককে ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় কল্যাণপুর জামের মসজিদের রাস্তা থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে সেখান থেকে জোহারকে তারা নিয়ে যায় মিরপুর থানার আমলা গ্রামের একটি বাড়িতে সেখানে জোহারকে মারধর সহ নানা প্রকার শারীরিক নির্যাতন করে সজিব ও তার সহযোগীরা। পরে জোহারের মোবাইল ফোন থেকে তার বোন তাসলিমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশ, রকেট, নম্বরে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহৃত জোহারের আত্মীয় মামুন বলেন, অপহরণকারীরা জোহারের বোন তাসলিমার কাছে বারংবার মোবাইলে কল করে অনবরত দাবিকৃত টাকা প্রেরণের কথা বলেন। ফোন লাইনে থাকা অবস্থায় নির্যাতন চালানো হয় জোহারের ওপর আর নির্যাতনের সেই আর্ত চিৎকার শোনানো হয় বোন তাসলিমা ও তার পরিবারকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জোহারের পরিবার আমাকে জোহারের অপহরণের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়। এ সময় আমি কাল বিলম্ব না করে দ্রুত দৌলতপুর থানা-পুলিশকে অবহিত করে জোহারকে উদ্ধারে সাহায্য চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক এস এম জাবীদ হাসান বলেন, গত ২৫ তারিখ রাতে মুক্তিপণ দাবিতে যুবক অপহরণের সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে অভিযানে নামে দৌলতপুর থানা-পুলিশ। এ সময় ফোন কলের সূত্র ধরে ভোর আনুমানিক চারটার দিকে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সজিবকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণে জড়িত সাতজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে অপহৃত জোহারকে উদ্ধারে মিরপুর উপজেলার আমলা বিলপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে হাত পা মুখ বাধা অবস্থায় জোহারকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে এ সময় পুলিশের অভিযানের ঘটনা টের পেয়ে জোহারকে ফেলে রেখে অপহরণকারী চক্র পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের উদ্ধারে মুক্তি পাওয়া জোহার নিজেই বাদী হয়ে গ্রেপ্তার সজিবকে প্রধান করে সাতজনের নামোল্লেখসহ অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা করেন।
বুধবার গ্রেপ্তার সজিবকে আদালতে সোপর্দ করলে সজিব ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ বিচারিক হাকিমের কাছে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ মামলার এজাহারভুক্ত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।