Home Second Lead কবি শামসুর রাহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কবি শামসুর রাহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কবি শামসুর রাহমান

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

আজ মঙ্গলবার বাংলা কাব্যসাহিত্যের অন্যতম প্রধান পুরুষ কবি শামসুর রাহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬ সালের এই দিনে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশের নাগরিক জীবনের কবি শামসুর রাহমান তার আধুনিক কবিতার মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মনে মানবিক ও শাশ্বত প্রেমের অবিনাশী আবেদন সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন।

পঞ্চাশের দশক থেকে বাঙালি জাতির নানা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, সামাজিক জীবনের অসংগতি, ব্রিটিশ ও পশ্চিমাদের শোষণের বিরুদ্ধে কবি শামসুর রাহমানের কবিতায় নির্মিত হয় অনন্য বাকপ্রতিমা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে তার কবিতা আমাদের মন ও মননে যে আবেগ সৃষ্টি করে তার তুলনা শুধু তিনিই।

১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে জন্ম নেন তিনি। এই রাজধানীতেই তার বেড়ে ওঠা। তাই নাগরিক দুঃখ-সুখ ও জীবনযাপন তার কবিতায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে। জীবনের সত্য-সুন্দরকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য। পাশাপাশি বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত অধ্যায় ফিরে ফিরে এসেছে তার কবিতায়।

শামসুর রাহমানের যেসব অবিস্মরণীয় কবিতা আমাদের মনে প্রতিনিয়ত অনুরণন সৃষ্টি করে তার মধ্যে `তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,` `স্বাধীনতা তুমি`, `বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়`, `হরতাল`, `আসাদের শার্ট`, `বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা`, `দুঃস্বপ্নে একদিন` ইত্যাদি। এসব কবিতার ভাব-বাণী কবিতাপ্রেমী মানুষকে এক অন্য জগতের নিয়ে যায়।

১৯৬০ সালে শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ `প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে` প্রকাশিত হয়। ৬০টিরও বেশি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে তার। এ ছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে শিশুতোষ, অনুবাদ, ছোটগল্প, উপন্যাস, আত্মস্মৃতি, প্রবন্ধ-নিবন্ধের অনেক গ্রন্থ।

শামসুর রাহমান সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এর পর তিনি `অধুনা` নামে একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

শিল্প-সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য শামসুর রাহমান বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), একুশে পদক (১৯৭৭), স্বাধীনতা পদক (১৯৯১) ছাড়াও দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন। মৃত্যুর পর কবির ইচ্ছানুযায়ী ঢাকার বনানী কবরস্থানে, মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।