Home Second Lead কমলা: পাইকারিতে ৯০, খুচরায় ১৫০

কমলা: পাইকারিতে ৯০, খুচরায় ১৫০

২৪ কেজির ক্যারেট ২২শ থেকে ২৬শ টাকা

আয় করতে না পারলে সংসার চলবে কিভাবে?

নাজমুল হোসেন

চট্টগ্রাম: নগরীতে ফলের বৃহত্তম পাইকারি বাজার স্টেশন রোডের ফলমন্ডি। বিভিন্ন স্থানে ফলের সরবরাহ হয় এই বাজার থেকে। ২ মাস আগে কমলার সিজন চলে যাওয়ায় কমলার দামও একটু বেড়েছে। তবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এই কমলার দামে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা গেছে। পাইকারি বাজারে মানভেদে ২৪ কেজি ক্যারেটের কমলা বিক্রি হচ্ছে ২২শ থেকে ২৬শ টাকায়। কিন্তু খুচরা বাজারে ১ কেজি কমলা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, চীনের কমলার কার্টুন (১০ কেজি) ৯০০ টাকা । ইন্ডিয়ান কমলার কার্টুন (২৪ কেজি) ২৪শ থেকে ২৭ শ টাকায়। কয়েক মাস আগেও আমদানি করা কমলার কার্টুন ১৬ শ থেকে ১৭ শ  টাকা ছিলো। তবে সিজন না থাকায় এখন কমলার দাম একটু বেশি।

রাউজান থেকে আসা খুচরা ফল ব্যবসায়ী মো. আসলাম বলেন, ফলমন্ডি থেকে সব সময় ফল কিনতে আসি। মৌসুম শেষ হওয়াতে কিছু কিছু ফলের দাম বেড়েছে। তবে, কমলার দামটা একটু বেশি।

পাইকারির সাথে খুচরা বাজারে তারতম্য সম্পর্কে তিনি বলেন, আড়তে পর্যাপ্ত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। যে ফল পাওয়া যাচ্ছে তার দামও বেশি। আগে ১ কেরেট কমলা ১৬ শ ৫০ টাকা দিয়ে কিনতাম কিন্তু বর্তমানে ২৪শ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আবার ফল আনতে ভ্যানভাড়াও বেশি দিতে হচ্ছে। কার্টুনে ১ থেকে ২ কেজি নষ্ট হয়ে যায়, এ কারণে বেশি দামে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারে দেশি কমলার চাহিদা থাকলেও বিদেশী কমলায় সয়লাব।

চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো আলমগীর জানান, বাজারে দেশি ফলের চেয়ে বিদেশি ফলের চাহিদা বেশি। গড়ে প্রতিদিন এই মার্কেটে ফল নিয়ে ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক প্রবেশ করে। তার মধ্যে ১০ ট্রাক কমলা আসতো। কিন্তু বর্তমানে ৪ থেকে ৫ ট্রাক কমলা আসছে। তাই কমলায় প্রতি কার্টুনে ৫শ টাকা দাম বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে যখন কমলার কার্টুন ১৭শ টাকা ছিলো তখনও খুচরা ব্যবসায়ীরা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করেছে। বর্তমানে কিছুটা দাম বেশি তাই বলে এতো লাভে বিক্রি করবে এটা কেমন কথা?

বাজারে দেশি কমলার সরবারাহ কেমন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাজারে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার দেশি কমলাই আসেনি। যেসব বিদেশি ফল আমদানি হচ্ছে, সেগুলো দেশে কার্যত উৎপাদন হয় না। তাই আমদানির বিকল্প নেই। সারা বছর বিদেশি ফলের চাহিদা রয়েছে।

তবে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে চলতি মৌসুমে দুই হাজার একর জমিতে কমলার ফলন হয়েছে। যা গত বছর এক হাজার ৯৫১ একর জমিতে চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে শুধু নানিয়ারচর উপজেলায় কমলার চাষ হয়েছে ৬০০ একর জমিতে। চলতি বছরে ৯ হাছার ৬০০ টন কমলা ফলনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল।

আগ্রাবাদে ভ্যানে ফল বিক্রি করা রাকিব বলেন, আগে আমরা কমলার কেজি বিক্রি করেছি ১শ টাকা। কিন্তু আড়তে যে হারে দাম বেড়েছে, এখন ১৫০ টাকার নিচে বিক্রি করার কোনো উপায় নেই। আমরা কম লাভে বিক্রি করছি এ কারণে এই দামে দিতে পারছি। কিন্তু অনেকে দেখেন ১৮০ টাকা কেজিও বিক্রি করছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, আড়তে এখন ফল তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। আবার গাড়ি নিয়ে ফল আনতে গেলে অনেক সময় পুলিশ বাঁধা দিচ্ছে। আবার বিক্রির সময়ও মাঝে মাঝে পুলিশ দাবড়ানি দিচ্ছে। পেটের দায়ে এমন পরস্থিতিতেও ফল বিক্রি করতে বের হতে হচ্ছে। আয় করতে না পারলে সংসার চলবে কিভাবে?