বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি না সারিয়েই নির্বাচনী প্রচারে যোগ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন গুঞ্জন চলছিলই। হোয়াইট হাউসও ট্রাম্পের শরীর-স্বাস্থ্য আর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে কোনও খবরই প্রকাশ্যে আনেনি। তাই সংক্রমণ না সারিয়েই ট্রাম্প বাহাদুরি দেখাচ্ছেন এমন খবর রটতে দেরি হয়নি। সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেওয়ার আগে একটানে মাস্ক খুলে ফেলতেও দেখা যায় তাঁকে, যা নিয়েও সমালোচনায় মুখর বিরোধীপক্ষ। সবমিলিয়ে তাই তড়িঘড়ি ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস।
কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন সিন কনলে। সোমবার হোয়াইট হাউসের তরফে বিবৃতি দিয়ে সিন বলেন, ক্রমান্বয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট করোনা-মুক্ত। তাঁর শরীরে এখন সংক্রমণের লেশমাত্র নেই। এরপরেই প্রশ্ন ওঠে, অ্যান্টিজেন টেস্টের থেকে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট অনেকবেশি নির্ভরযোগ্য। অ্যান্টিজেন টেস্টে ফলস নেগেটিভ রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা বেশি। এই প্রসঙ্গে অবশ্য হোয়াইট হাউস মুখ না খুললেও. ডাক্তার সিনের দাবি নানারকম টেস্ট করা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। সব ক্ষেত্রেই তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
গত সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আক্রান্ত হন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াও। হাসপাতালে চারদিন কাটিয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরেই টান মেরে মাস্ক খুলে ফেলেছিলেন ট্রাম্প। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন কিনা সে নিয়েও সংশয় দানা বাঁধে নানা মহলে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেও করোনা রুখতে ব্যর্থ ট্রাম্প। সে নিয়ে আমেরিকাবাসীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার মধ্যে নিজেও কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। এ সব কিছুই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে মনে করেই সাত তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে ফিরে নিজেকে সুস্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। যেন কিছুই হয়নি, এমন বেপরোয়া মনোভাব তাঁর। করোনার মতো অতিমহামারীর প্রকোপকেও খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী প্রচারেও এমনই বেপরোয়া দেখা যায় ট্রাম্পকে। জনসমক্ষে মাস্ক খুলে ফেলে বলেন তিনি ভাল আছেন। দারুণ অনুভূতি হচ্ছে তাঁর। করোনা ভয় ছেড়ে বাইরে এসে লোকজনকে ভোট দিতেও উৎসাহিত করেন তিনি।
ভোটের প্রচারে নিজেই কোভিড-প্রোটোকল ভেঙে বারে বারেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মিলিটারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার মাঝেই হাসপাতাল থেকে আচমকা বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁর কার্যকলাপে রীতিমতো নাজেহাল হয়েছেন ডাক্তাররা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন রাষ্ট্রনেতা হয়ে কীভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করতে পারেন ট্রাম্প। তাতে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের খুব একটা কিছু যায় আসেনি। হাসপাতাল থেকে ভিডিও বার্তায় খোলাখুলি বলেছেন, তিনি দিব্যি ভাল আছেন। করোনার মুখোমুখি হয়ে বাস্তবে অনেক কিছু শিখেছেন। ঠিক যেভাবে স্কুলে বই পড়ে শিক্ষা নিতে হয়। তাই তাঁর অভিজ্ঞতা নাকি বলছে, করোনাভাইরাসকে খুব একটা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নোভেল করোনাকে সাধারণ ফ্লু-র সঙ্গে তুলনা করে তা নিয়ে ফেসবুক ও টুইটারে বিতর্কিত পোস্ট করেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য মুছে ফেলতে বাধ্য হয়েছে মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা। টুইটার ওই মন্তব্যকে ‘হাইড’ করেছে।