ফ্রান্স: ফ্রান্স বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৬২ হাজারের মতো মানুষ। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখ যোদ্ধা বা ফ্রন্টলাইনে কাজ করা শত শত অভিবাসী কর্মীদের নাগরিকত্ব দিচ্ছে ফ্রান্স। সাতশোর বেশি মানুষ এরই মধ্যে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন বা গ্রহণ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং দোকান মালিক।
বিশ্বজুড়েই ফ্রন্টলাইনে থাকা কর্মীরা সবচেয়ে বেশি হারে কভিড-১৯ এর সংস্পর্শে এসেছেন এবং এদের মধ্যে অনেকেই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। যাদের মধ্যে চিকিৎসক এবং নার্সরাও রয়েছেন।
বিবিসি জানায়, দ্রুততম সময়ে বা ফাস্ট-ট্র্যাক নাগরিকত্ব দেয়া হবে এসব সম্মুখযোদ্ধাদের। করোনা মোকাবিলায় কাজের স্বীকৃতি দিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে কভিড-১৯ মোকাবিলায় সহায়তা কাজে অংশগ্রহণকারী বাসিন্দাদের দ্রুত স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করার আহ্বান জানিয়েছিল।
সাধারণত ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পেতে হলে দেশটিতে টানা ৫ বছর বসবাস করতে হয়। পাশাপাশি একটি স্থিতিশীল আয় এবং ফরাসি সমাজে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিষয়টি তুলে ধরতে হয়। কিন্তু সরকার বলছে যে, কভিড কর্মীরা ‘তাদের মহান সেবা’ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ফ্রান্সে মাত্র দুই বছর বসবাস করলেই নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
২০১৭ সালে ফ্রান্সের অভিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৬৪ লাখ। যাদের মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে দেশটির সাবেক উপনিবেশ ছিল এমন দেশ বিশেষ করে উত্তর এবং পশ্চিম আফ্রিকা থেকে যাওয়া বাসিন্দারা।
কিন্তু ইউরোপের দেশটিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি ছিল বেশ জটিল আর দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এছাড়া নাগরিকত্ব দেয়ার হারও কমেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ১০% কমেছে।
যদিও ফ্রান্সের প্রতি সাহসিকতা এবং অবদানকে নাগরিকত্ব দেয়ার মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।
দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়ার এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রথম ঘোষণা এসেছিল সেপ্টেম্বরে। এ পর্যন্ত ৭৪ জন ফরাসি পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন এবং আরো ৬৯৩ জন এই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন। সব মিলিয়ে ২ হাজার ৮৯০ জন মানুষ এখনো পর্যন্ত আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার নাগরিকত্ব বিষয়ক জুনিয়র মিনিস্টার মারলিন শিয়াপ্পার দপ্তর থেকে জানানো হয়, ‘পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী, নারী পরিচ্ছন্নকর্মী, শিশু পরিচর্যা কর্মী, চেকআউট কর্মী: এরা সবাই এই দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার প্রমাণ দিয়েছেন, আর এখন এই প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব তাদের জন্য কিছু করা।’
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক