বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা : ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিতে প্রস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কলকাতা বন্দর ট্রাস্টও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কলকাতা বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার প্রাক-প্রস্তুতি দেখে গেছেন ত্রিপুরায়। ত্রিপুরা চেম্বার প্রেসিডেন্ট এম এল দেবনাথ আজ এই তথ্য জানিয়ে বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, চেয়ারম্যান বিনীত কুমার আগরতলা স্থলবন্দরের যাবতীয় সুবিধা সরেজমিনে দেখে গেছেন। ট্রান্সশিপেমেন্ট করা পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়ক পথে নিয়ে আসা হবে আগরতলায়। এখানে কন্টেইনার এবং সাধারণ পণ্য মজুত রাখার প্রচুর সুবিধা বিদ্যমান।
কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা পণ্য প্রাথমিকভাবে সেখান থেকে আখাউড়া হয়ে আগরতলা স্থলবন্দরে প্রবেশ করবে। বিনীত কুমার মঙ্গলবার এসেছিলেন ত্রিপুরায়। আগরতলার প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব-এর সাথেও বৈঠক করেন তিনি। দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যে কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য পরিবহণ শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ গত মাসে চট্টগ্রাম-কলকাতা দু’দফা পরীক্ষামূলক (ট্রায়াল রান) ট্রান্সশিপমন্ট হবে বলে জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বিজনেসটুডে২৪ কে বলেছেন যে পুরোদমে প্রস্তুতি রয়েছে ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গো হ্যান্ডলিং করার। তবে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে চট্টগ্রাম ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ চলমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট কন্টেইনার/কার্গো নেয়া হবে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে। পরবর্তীতে রামগড়-সাব্রুমে ফেনি নদীর ওপর নির্মিয়মান মৈত্রী সেতু-১ দিয়ে পারাপার হবে ট্রান্সশিপমন্ট পণ্য। ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেতুটির। মূল সেতু থেকে ২৪০ মিটার দীর্ঘ এপ্রোচ রোডটি রামগড়- বারৈয়ারহাট(চট্টগ্রাম) মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হবে। ভারত ইতিমধ্যে ঐ এপ্রোচ রোডের জন্য অধিগ্রহণ করা জায়গাটিতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। চালু হবে স্থল বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক শ’ কিলোমিটারের মধ্যে সেতুটি। অদূরে গড়ে তোলা হচ্ছে স্পেশাল ইকোনোমিক জোন।
চট্টগ্রাম-কলকাতা সমুদ্রপথে দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার।আর চট্টগ্রাম থেকে আগরতলা ২০০ কিলোমিটার।
ভারত ইতিমধ্যে আশুগঞ্জ নৌ বন্দরকে ব্যবহার শুরু করেছে। তবে, সেখানে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করার মত আধুনিক সুবিধা নেই। আশুগঞ্জকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন করার কাজ চলছে ভারতের আর্থিক সহায়তায়। কাজ শেষ হতে প্রায় ৫ বছর লেগে যেতে পারে।
বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের সরকার প্রধান প্রায় ৯ বছর আগে বহুমাত্রিক ট্রানজিট (নৌ,সড়ক ও রেল)চালুর বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক হয়। ২০১৬ সালের জুনে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে নৌ-ট্রানজিটের আওতায় পণ্য পরিবহন শুরু করে ভারত। তবে, এ ব্যবস্থা তেমন সক্রিয় নয়।