বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
কাবুল থেকে দ্রুত মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে আমেরিকা। মার্কিন সেনাকর্তাদের ধারণা, খুব শীঘ্রই কাবুলে ঢুকে পড়তে পারে তালিবান। তারা ঘোষণা করেছে, আফগানিস্তানে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তারা আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশে সেই জমানা ফিরে আসছে আবার। আফগানিস্তানের গ্রামাঞ্চলের এক বিরাট অংশ ইতিমধ্যে দখল করে নিয়েছে জঙ্গিরা।
তালিবান কীভাবে আফগানিস্তানে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি মানুষকে বোঝাবে, নাকি বলপ্রয়োগ করবে? আপাতত তালিবানের সামরিক কৌশল সফল হয়েছে। একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ চালিয়ে তারা পর্যদুস্ত করেছে আফগান বাহিনীকে। এর আগে আমেরিকার সঙ্গে একদফা চুক্তিও করেছে তালিবান। তারা বলেছে, মার্কিন সেনা তাদের দেশ ছেড়ে চলে গেলে কখনও আমেরিকার কোনও কারখানা বা দূতাবাসের ওপরে হামলা চালাবে না।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, আমেরিকার চাপেই আফগান সরকার সম্প্রতি কয়েক হাজার তালিবান বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তারা জেল থেকে বেরিয়ে ফের যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। গত আটদিনে একের পর এক শহর দখল করেছে তালিবান। এই অবস্থায় তারা সরকারের কর্তাব্যক্তিদের আত্মসমর্পণ করতে বললেও আশ্চর্যের কিছু নেই।
প্রশ্ন উঠেছে, এখন আফগান সেনার কী হবে? কয়েক বছর ধরে মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, আফগান সেনাদের এক বড় অংশ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের লড়াই করার ইচ্ছা নেই। সর্বোপরি তারা মার্কিন সেনার ওপরে অনেকাংশে নির্ভরশীল।
আপাতত জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ দু’দিক দিয়ে কাবুলের উদ্দেশে এগোচ্ছে তালিবান। আমেরিকা সহ আন্তর্জাতিক মহল এখন চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে তালিবান ও আফগান সরকার একটা সমঝোতায় আসে। সরকারি সূত্রের খবর, আফগান সরকার ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে তালিবানের কাছে। কারণ রাজধানী কাবুল এখনও পর্যন্ত নিরাপদ থাকলেও, যেভাবে তালিবান গতি বাড়াচ্ছে, তাতে তাদের কাবুল পৌঁছে যেতে বেশি সময় লাগবে না। মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে আছে তারা কাবুল থেকে। ফলে বেশ চাপের মুখে পড়েছে সরকার।
এর আগেও বহু বার আমেরিকার মধ্যস্থতায় আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি বৈঠক করেছে তালিবান। কিন্তু রফাসূত্র কখনওই বেরোয়নি। শান্তি আলোচনার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী গুলাম ফারুক মাজরো বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এ বার সরকারের তরফে যুদ্ধ বিরতির জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তালিবান প্রতিনিধিদের।’’
মনে করা হচ্ছে, ভাগাভাগি করে শাসনের ক্ষমতার যে কথা তালিবানকে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার, সেটাই সেই ‘সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব’।
৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ১২টিই চলে এসেছে তাদের দখলে। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন গজনী, হেরাট এবং কান্দাহার। বৃহস্পতিবারই এই তিনটি শহর একসঙ্গে দখল করেছে তারা। পরিত্যক্ত সেনা ঘাঁটির ছবিও প্রকাশ করেছে তালিবান।