বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
খাদ্য সঙ্কটের জেরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আঁচে অতিষ্ঠ উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের জীবন। কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা সম্প্রতি পার্টি মিটিংয়ে খাদ্য সঙ্কট, মূল্যবৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন। তবে যেহেতু কিম জং-উনের শাসনে গোপনীয়তার পর্দায় ঢেকে রাখা হয় গোটা দেশকে, তাই সঙ্কটের আসল চেহারাটা বাইরের দুনিয়ার কাছে অজানাই রয়ে গিয়েছে। কিন্তু যতটুকু তথ্যও বা সামনে আসছে, ততটুকুই স্পষ্ট তুলে ধরছে, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি কী ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে নাগরিক জীবনে।
চাল, জ্বালানির দাম মোটামুটি স্বাভাবিক, স্থিতিশীল, কিন্তু চিনি, সয়াবিন তেল, ময়দার মতো বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে মূল্যবৃদ্ধির আঁচে হাত দেওয়ার উপায় নেই। বিভিন্ন রিপোর্টের দাবি, রাজধানী পিয়ংইয়ঙে এক প্যাকেট কফির দাম ১০০ মার্কিন ডলার । ব্ল্যাক টি-র একটা ছোট প্যাকেটের দাম বেড়ে হয়েছে ৭০ মার্কিন ডলার । এক কেজি কলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ মার্কিন ডলারে । পিয়ংইয়ঙে এক বোতল শ্যাম্পু কিনতে হচ্ছে ২০০ মার্কিন ডলার মূল্যে।
১৯ জুন শাসক কমিউনিস্ট পার্টির চারদিনের বৈঠকে সঙ্কটের কথা মেনে নিয়ে কিম পরিস্থিতি মোকাবিলার পন্থা খুঁজছেন বলে জানিয়েছিলেন। সিএনএন বলেছে, উত্তর কোরিয়া সরকারি ভাবে সঙ্কট কতটা গভীর, জানায়নি, তবে খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের প্রাথমিক হিসাব উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, পুরো দেশে মোটামুটি ৮ লাখ ৬০ হাজার টন খাদ্যের ঘাটতি আছে, যা তাদের দুমাসের বেশি সাপ্লাইয়ের সমান।
২০২০-২১ এর শীতে সঙ্কটের সূত্রপাত। করোনা অতিমারীর জেরে বাইরে থেকে খাদ্যপণ্যের আমদানি কমে যায়। সারের জন্য উত্তর কোরিয়াকে চিনের ওপর নির্ভর করতে হয়। গত মে মাসে শোনা যায়, চাষিদের সার তৈরির জন্য রোজ নিজেদের ২ লিটার করে প্রস্রাব ডোনেট করতে হবে। অতিমারীর জন্য দেশের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাবতীয় বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। শোনা যায়, গত এপ্রিলে কিম সরকারি কর্তাদের জানিয়ে দেন, নয়ের দশকের মতো ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আসছে। সেজন্য তৈরি থাকতে হবে। এবার পরিস্থিতি হবে আগের চেয়েও কঠিন।