কুলাউড়া (মৌলভীবাজার ) থেকে আজহার মুনিম শাফিন : আকাশে কালো মেঘের ভেলা । তবুও জনমনে ভয় নেই। শামিল হতে হবে কুস্তি প্রতিযোগিতার আনন্দ উৎসবে। এমনি আমেজে কুলাউড়া’র হিংগাজিয়া চা বাগানে দিনব্যাপী চলে কুস্তি উৎসব।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে শতাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাগানের পন্ডিত বিপ্লব উপদ্ধায়। সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলে এই উৎসব।
ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার রাজ্যের বসবাসকারীদের একটি অংশ বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে এসে বাস করা শুরু করে। তারা তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য শত বছর ধরে এই কুস্তি উৎসব পালন করে আসছে। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে নাগপঞ্চমীতে অনুষ্ঠিত হয় কুস্তি উৎসব । ধারাবাহিকতায় এবারো যেনো কমতি নেই। দিনটিকে ঘিরে সারাদিন গ্রামের সবার ঘরে ঘরে ভালো রান্না হয়ে থাকে, খাওয়া-দাওয়া করে কুস্তির জন্য সমাবেশ হয়। এই কুস্তিকে জয় পাবার জন্য মাস খানেক আগ থেকেই নিজের শরিরের যত্ন নিতে শুরু করেন কুস্তিবাজরা।
দর্শকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, লড়াই ছাপিয়ে বন্ধুত্ব ছড়ায় এই কুস্তি। সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়ে থাকে এই কুস্তি খেলায়।
পরাজিত এক কুস্তিগীর বলেন, শত শত দর্শকের ভিড়ে নিজের হার দেখা অনেক খারাপ লাগে। তিনি আরও বলেন পুরো বছরে একবারই সুযোগ পাওয়া যায় শক্তিমত্তা দেখানোর। সেইটাতে সবাই বিজয়ী হতে চায়। আর যে এই কুস্তিতে জয়ী হয় সে আগামী ১ বছরের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী নির্বাচিত হয়ে থাকে।
বিজয়ী কুস্তিবিদ শ্রীকান্ত প্রজাপতি বলেন, আজকের দিনটার জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজ আমার বয়সীদের মধ্যে জয়ী হয়ে ভালো লাগছে। এইদিন বয়স ভিত্তিতে জয়ী নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
খেলায় অংশগ্রহণকারী শ্রাবণ পাশি জানান, ‘তিনি সিলেটে চাকরি করেন। এই দিনটার জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়ে উৎসবে সামিল হয়েছেন। পরিবার বন্ধুদেরকে নিয়ে আজ ভালোই একটা দিন পার করছেন।’
উল্লেখ্য, কুস্তি ছাড়াও লং জাম্প, হাই জাম্প সহ ভার উত্তোলন খেলাও অনুষ্ঠিত হয়।