রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী: প্রতিবছর ঈদ, কোরবানী কিংবা সরকারী ছুটিতে বাড়তি পর্যটকের আগমন ঘটে কুয়াকাটায়। এবছরও এর ব্যতিক্রম ঘটবেনা। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে এই ঈদুল আযহায় লক্ষাধিক পর্যটকের আগমনের আশা ব্যক্ত করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে বুকিং হয়েছে হোটেল মোটেলর অধিকাংশ কক্ষ। তাই নতুন রুপে সাজানো হচ্ছে কুয়াকাটাকে। ঈদকে ঘিরে ৫০ কোটি টাকা আয়ের আশাও করেছেন ব্যবসায়ীরা।
সূর্যদয় সূর্যাস্তের বেলাভূমি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। এখানে আসলে সমুদ্রের মোহনীয় ঢেউ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে রয়েছে ঝাউবাগান, শুটকি পল্লী, গঙ্গামতির চর ও লাল কাকড়ার চর। এদিকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটেছে গুল্ম লতা বা সাগর লতা। এই পর্যটন কেন্দ্রে আরও রয়েছে শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন মার্কেট, ইলিশ পার্ক ও ইকো পার্কসহ বেশ কিছু পর্যটন স্পট। মনোমুগ্ধকর কুয়াকাটার এ সৌন্দর্য উপভোগ করতেই মূলত এ পর্যটন কেন্দ্রে আসেন পর্যটকরা। এবার ঈদ উপলক্ষে ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন থেকে ইতিমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীর হোটেল মোটেলর ৭০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রায়ই দুই শতাধিক হোটেলের সকল কক্ষ বুকিংয়ের আশা ব্যক্ত করেছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। তাই হোটেল মোটেল সহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নতুন করে সাজাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে ট্যুরিষ্ট বোড মালিক, ট্যুর গাইড, ফটোগ্রাফার ও বেঞ্চ ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম বাচ্চু জানান, লক্ষাধিক পর্যটকদের আগমনকে ঘিরে আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি যাতে পর্যটকদের পুরোপুরি সেবা ও বিনোদন দিতে পারি। তবে কুয়াকাটায় বেশ কিছু পর্যটন স্পট ছাড়া আলাদা কোন বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। তাই পর্যটকরা এসে একদিনের মধ্যে ঘোরাফেরা করে চলে যায়। যদি বাড়তি কোন বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে সম্ভাবনাটা আরো বাড়বে।
হোটেল সমুদ্র বাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন জানান, আমাদের রিসোর্ট ১২-১৩ তারিখে পুরো অগ্রীম বুকিং পেয়েছি। আর ১৪-১৫ তারিখেরও ৭০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। হোটেল আমানের পরিচালক রিপন সাব্বির জানান, ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে আমাদের হোটেলের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং পেয়েছি। আশাকরছি দুই দিনের মধ্যে বাকিগুলোও বুকিং হয়ে যাবে।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা’র (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট ইমতিয়াজ তুষার জানান, পর্যটন মৌসুম হিসাবে আমরা নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ধরে থাকি। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোদনের ফলে এখন সারা বছর আমরা অনেক পর্যটক পাবো। তাই ঈদ ও পদ্মা সেতুর সুফল হিসাবে আগামী ১০ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত একটানা লক্ষাধিক পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকল পর্যটন ব্যবসায়ীরা তাদের প্রস্তুতি সম্পান্ন করেছেন। ঈদের এক সপ্তাহে ৫০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক জানান, সারা বছরই পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। এছাড়াও বিশেষ দিনগুলোতে আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা থাকে তেমনি এই ঈদকে ঘিরে আমরা বিভিন্ন টিম তৈরি রয়েছি।