লালমোহন ( ভোলা ) থেকে সংবাদদাতা: লালমোহনে কেঁচো সার উৎপাদন করে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি নিজের ভাগ্য বদল করেছেন যুবক মঞ্জুর হোসেন। এখন প্রতিমাসে এই খামার থেকে তিনি আয় করছেন ৩০ হাজার টাকা।
মাত্র দুই বছরের মধ্যে তিনি নিজেকে সফল একজন খামারি হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তার তৈরী কেঁচো সার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এলাকাতে। তাকে দেখে এখন উপজেলার অনেক তরুণ ও নারীরা বিষমুক্ত এ জৈব সার উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ছেন।
মঞ্জুর হোসেন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এক হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাত্র দুই বছর আগে তিনি কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন। এখন সেই খামার থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। হয়েছেন পাঁচ লাখ টাকার মালিক।
জানা গেছে, ফসলের ক্ষেতে রাসায়নিক সার ব্যবহারে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয় কৃষকদের। আর এই ব্যায় কমিয়ে আনতে কেঁচো দিয়ে তৈরীকৃত সার উৎপাদন শুরু করেন মঞ্জুর হোসেন। হাতের নাগালে ভালো মানের সার পাওয়ায় এখন কৃষকরা তা কিনে নিজ জমিতে প্রয়োগ করছেন। ফলে ফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঞ্জুর হোসেন বলেন, “দুই বছর আগে কৃষি অফিস থেকে কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এরপর ধিরে ধিরে গড়ে তুলোছি ‘ভার্মি কম্পোষ্ট’ খামার। অনলাইন এবং অফলাইনের মাধ্যমে এই সার বিক্রি করছি। কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন।”
তিনি আরো বলেন, ‘কেঁচো, গোবর, কচুরিপানা, কলাগাছ, খড়কুটা দিয়ে মাত্র ২৫-৩০ দিনের মধ্যেই তৈরী হচ্ছে কেঁচো বা জৈব সার। লালমোহনের বেশিরভাগ কৃষক এখন অন্য সারের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন এই সার।’
মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘রিং, কারেন্ট ও হাউজ পদ্ধতিতে এ সার উৎপাদন করছি। এ সার কুমিল্লা, যশোর, ঢাকা ও পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অনলাইলের মাধ্যমে বিক্রি করছি। বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কেঁচো সারের কোন বিকল্প নেই।’
স্থানীয় বাসিন্দা ভুলু রানী বলেন, ‘মঞ্জুকে দেখে আমিও কেঁচো তৈরী শুরু করেছি। বর্তমানে আমি ৮টি রিং দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন করেছি।’
কৃষক মো. হানিফ বলেন, ‘এ বছর কেঁচো সার দিয়ে বাদাম, ধান ও মরিচের আবাদ করেছি। ফলন অনেক ভালো।’
অপর কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘মঞ্জুরের উৎপাদিত সার দিয়ে ধান, ভুট্রা, মরিচ ও মুগডাল আবাদ করেছি। অন্য সারের তুলনায় অর্ধেক খরচ হয়েছে।’
এ ব্যপারে ভোলার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. এমাজ উদ্দিন বলেন, ‘কেঁচো সারটি ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক ভালো। মঞ্জুর হোসেন কৃষি অফিসের সহযোগীতা নিয়ে সফল হয়েছেন। এ সার ব্যবহারের খরচও অনেক কম। এছাড়া সারটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।