Home Third Lead সাজা স্থগিত, নির্দেশ কোরআন তিলাওয়াতের

সাজা স্থগিত, নির্দেশ কোরআন তিলাওয়াতের

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: ৫ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি নোয়াখালীর চাটখিল থানার পশ্চিম শোশালিয়া গ্রামের শামছুল আলমের ছেলে ইয়াকুব আজাদ (৩৫)।  ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালত রবিবার সাজা স্থগিত করেন এবং পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা, মায়েদা ও নিসা ভালো করে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া তাঁকে ৫০টি গাছ লাগাতে এবং মাদ্রাসায় ভালোমানের কিছু ধর্মীয় বই উপহার দিতে বলা হয়েছে।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) বিপুল চন্দ্র দেবনাথ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর শাহবাগ থানার হোটেল আপ্যায়নের পূর্বপাশ থেকে ইয়াকুবকে ৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এসএম এলতাস উদ্দিন ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের ৫ জুলাই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদ তালুকদার।

২০১১ সালের ১ জুন এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। চার্জগঠন থেকে মামলার বিচার কার্যক্রম আসামি পলাতক থাকা অবস্থায় হয়। রায়ের পর আসামি পরোয়ানামূলে ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন এবং ২ নভেম্বর তিনি জামিন পেয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। আপিল শুনানির জন্য আদালতে দিন ধার্য ছিল রবিবার।  আইনজীবী জায়েদুর রহমানের মাধ্যমে আসামি প্রবেশন আইন অনুযায়ী দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানিকালে কাঠগড়ায় থাকা আসামির কাছে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, আপনার (আসামি) ছেলে-মেয়ে আছে? জবাবে আসামি জানান, এক ছেলে মাদ্রাসায় হাফেজি পড়ে, আর মেয়ে ছোট। তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ঘর পবিত্র করার জন্য ছেলেকে হাফেজি পড়াচ্ছেন, সে আপনার জন্য দোয়া করবে, মরে গেলে জানাজা পড়াবে, আর আপনি ইয়াবা মামলার আসামি।

এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনি কি পড়া লেখা করেছেন?’ তখন আসামি বলেন, ‘আমি মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করেছি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘ছেলে মাদ্রাসায় হাফেজি পড়ে, আপনি মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস। কেন ইয়াবা মামলার আসামি হলেন?’ তখন আসামি বলেন, ‘স্যার আমাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়েছে।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের কোন সূরায় মাদক সম্পর্কে বলা আছে জানেন? সূরা, বাকারা, মায়েদা ও নিসা ভালো করে পড়বেন। এর মধ্যে পাবেন মাদক সম্পর্কে বলা কথা।’

এরপর বিচারক বলেন, ‘আর আপনার সাজা স্থগিত করা হলো। আর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধায়নে থেকে আপনি (আসামি) ৫০টি গাছ লাগাবেন, পবিত্র আল কোরআনের সূরা বাকারা, মায়েদা এবং নিসা ভালো করে পড়বেন এবং আপনার ছেলে যে মাদ্রাসায় পড়ে, সে মাদ্রাসায় ভালোমানের কিছু বই উপহার দেবেন। এমন বই দিয়েন না যেন সে বই পড়ে না আবার মানুষ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।’