যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন মিথ্যা: সৌদি
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নৃশংসভাবে খুনে সম্মতি দিয়েছিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন, শুক্রবার প্রথম এই মন্তব্য করেছে আমেরিকার । সরাসরি সলমনকে এই ঘটনার জন্য দায়ী না করলেও এই ঘটনার দায় তিনি এড়াতে পারেন না বলেই জানিয়েছে আমেরিকা।
জো বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি গোয়েন্দা রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি অপারেশনের অনুমতি দিয়েছিলেন বিন সলমন। সেখানে সৌদির সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হয় বন্দি করা, নইলে মেরে ফেলার অনুমতি দেওয়া হয়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে যদি যুবরাজ বিন সলমন অনুমতি না দিতেন এই খুনের ঘটনা ঘটত না বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ তাঁর অনুমতির পরেই খুন করা হয়েছে খাসোগিকে। শুধুমাত্র এই একটি ঘটনা নয়, এই একই পদ্ধতিতে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেউ সলমনের বিরোধিতা করলে তাদেরও এভাবেই চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে কাজ করতেন জামাল খাসোগি। তিনি যুবরাজ সলমনের বড় সমালোচক ছিলেন। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ইস্তাম্বুলে তাঁকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছিল।
ট্রেজারি দফতর জানিয়েছে, একজন প্রাক্তন ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও র্যাপিড ইন্টারভেনশন ফোর্সের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে তারা। কারণ এই ঘটনার পরে সলমনকে নিরাপত্তা দেওয়া ও তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে সেই কারণে নিযুক্ত করা হয়েছিল এই টিম ওকর্মকর্তাকে।
খাসোগিকে খুনের পরে আমেরিকার পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘খাসোগি অ্যাক্ট’ নিয়ে আসেন। এই আইনের মাধ্যমে সেইসব বিদেশিদের আমেরিকায় ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয় যারা সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারকে হেনস্থা বা মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত। আই আইনের মাধ্যমে ৭৬ জন সৌদি নাগরিককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। আমেরিকা এই ধরনের ঘটনা বরদাশত করবে না বলেই সেই সময় একটি বিবৃতিতে বলেন ব্লিঙ্কেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন মিথ্যা: সৌদি
সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার সঙ্গে সৌদি আরবের ক্রাউন্স প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান জড়িত নেই বলে দাবি করেছে সৌদি আরব। সালমানকে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ‘নেতিবাচক, মিথ্যা এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলা হয়েছে।
শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশের পর সৌদি আরব বিবৃতিতে এভাবে প্রতিবাদ করে, ‘সৌদি আরব এই নেতিবাচক, মিথ্যা এবং অগ্রহণযোগ্য মূল্যায়ন প্রত্যাখ্যান করছে।’
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের দপ্তরের এই প্রতিবেদন বলছে, ‘সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা বা আটক করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি ক্রাউনের প্রিন্সই এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা বলে ২০১৮ সালেও সিআইএ সন্দেহ করেছিল। তবে এর আগে কখনও বিষয়টি প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
সৌদি আরবের দাবি, ‘এই অপরাধ ভিন্ন একটি গ্রুপ করেছে, যারা সব প্রাসঙ্গিক বিধি লঙ্ঘন করেছে।’
‘জড়িত সবাইকে অভিযুক্ত করে সাজা দিয়েছে আদালত। এই সাজা খাসোগির পরিবারও স্বাগত জানিয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার ক্রাউন প্রিন্সের বাবা বাদশা সালমানের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে জো বাইডেন ‘সর্বজনীন মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের বিষয়ে’ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে।
তখনই ধারণা করা হয় তিনি খাসোগি হত্যার বিষয়টি ট্রাম্পের মতো চেপে যাবেন না।